সিলেট রেলওয়ে ষ্টেশন ; কাউন্টারে নয় টিকেট থাকে বাবুর্চি তাহেরের কাছে
কলম শক্তি ডেস্ক ঃ সিলেট রেলওয়ে ষ্টেশনের স্টাফ বাবুর্চি তাহের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কালোবাজারী করে একসাথে ৪০/৫০টি টিকেট নিজের আয়ত্বে রেখে ইচ্ছামত চড়া দামে সাধারণ যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে। স্টেশনে টিকেটের জন্য হাহাকার থাকলেও বাবুর্চি তাহেরের কাছে সব শ্রেণির টিকেট পাওয়া যায়। এতে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন ট্রেনের যাত্রীগণ। জানা গেছে, অন্যান্য কালোবাজারীদের সাথেও স্টাফ বাবুর্চি তাহেরের রয়েছে গোপন আতাত। নগরীর ব্যবসায়ী অমর চক্রবর্তী টিকেটের জন্য স্টেশনের কাউন্টারে গেলে বুকিং সহকারী স্বস্থি, মাজহারুল ও জহর লাল তারা বলেন, আমাদের কাছে কোন টিকেট নাই। দেখেন স্টেশনের ভিতরে পেতেও পারেন। এসময় অন্য একজন লোক অমর চক্রবর্তীকে বলে যে, উপরে বাবুর্চি তাহেরের কাছে অনেক টিকেট আছে, তবে দাম বেশি দিতে হবে। তখন তিনি তাহেরের কাছে গেলে তাহের একটি আলমারী থেকে একটি টিকেটের বান্ডিল বের করে। চট্টগ্রামের দুটি শোভন চেয়ার টিকেটের মূল্য ৩২০ টাকা করে ৬৪০ টাকার বদলে বাবুর্চির কাছ থেকে ৯৫০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। এত দাম কেন জানতে চাইলে সে জানায়, আপনার পোষালে নিয়ে যান নাহলে অনেক কাস্টমার আছে। তখন তিনি বাবুর্চির সাথে দামাদামী নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়লে একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেল ও অন্যান্য সাংবাদিকরা জড়ো হতে থাকেন। তখন স্টেশন ম্যানেজার আতাউর রহমানের কাছে গেলে ম্যানেজার বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য অমর চক্রবর্তীও সাংবাদিকদের অনুনয় বিনয় করেন। এক পর্যায়ে তাহেরকে উপস্থিত করার জন্য সকলে চাপ দিলে তিনি তাহেরকে রহস্যজনক কারণে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কুলাউড়ার মহিলা ট্রেন যাত্রী রাবিয়া খাতুন তিনিও টিকেটের দিগুন মূল্যের অভিযোগ করেন। গত ২৪ অক্টোবর এক যাত্রী ২৭ তারিখে ঢাকা যাওয়ার কালনীর দুইটি টিকেট কেনার জন্য স্টেশনে গেলে ৬৬০ টাকার বদলে উনার কাছে থেকে ১২০০ টাকা রাখা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে স্টেশন ম্যানেজার আতাউর রহমানের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, আমাদের সব টিকেট অনলাইনের মাধ্যমে বুকিং হয়ে যায়। অনলাইনে টিকেট বুকিং হয়ে গেলে কালো বাজারী ও বাবুর্চি তাহেরের হাতে টিকেট কি করে যায় এমন প্রশ্ন করলে ম্যানেজার আতাউর রহমান কোন সদোত্তর দিতে পারেন নি। এক পর্যায়ে উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য তিনি অনুরোধ করেন। উল্লেখ্য, বিগত দিনে বেশ কয়েকবার আইন শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর হাতে এসব কালোবাজারীরা টিকেটসহ আটক হলেও তাদের দৌরাত্ম কমেনি। বরং দিন দিন কালোবাজারীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অনেক সময় দেখা যায়, রেল স্টাফরা টিকেট ছাড়া টাকার বিনিময়ে পারাবত ও উপবন ট্রেনে অনেক যাত্রীদেরকে উঠিয়ে দে। ভূক্তভোগী যাত্রী অমর চক্রবর্তীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, টিকেট কাউন্টারে গেলে টিকেট পাওয়া যায়না। স্টেশনের স্টাফদের কাছে দিগুন দামে টিকেট পাওয়া যায়, তাদের কাছে ৪০/৫০টি টিকেট থাকে কিভাবে। এরকম কত যাত্রী হয়রানীর শিকার হচ্ছে। এতে করে ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ রেল ডিপার্টমেন্ট থেকে তাদের আস্থা হারিয়ে ফেলবে। আর এতে করে সরকার রাজস্ব হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং রেল কর্তৃপক্ষের কাছে সুবিচার কামনা করেন।