দিরাইয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ইজিবাইক বন্ধের দাবী অযৌক্তিক নয় – হিল্লোল পুরকায়স্থ
আজ থেকে বছর পাঁচেক আগেও দিরাইয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ইজিবাইক ছিলনা, ছিলনা যাতায়াতের অসুবিধা। মানুষ যাতায়াতের জন্য রিকশা,সিএনজি,লেগুনা ব্যবহার করত।শোনা যেত না এতটা দূর্ঘটনার খবর। আজ ১০ দিন হয় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চাপায় সুজন মারা গেছে। আর ১০ দিন ধরে এসব ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল বন্ধ আছে। একবার ভেবে দেখুনত একবার বাজারের অলিগলি ঘুরে দেখুনত কত স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করা যাচ্ছে। বিশেষ করে হারনপুর – ঘাগটিয়া রোড হারানপুরের প্রবেশদ্বার আনোয়ারপুরের সাবেক জনপ্রিয় সিনেমাহলের সামনের রোডকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকের স্টেশন বলা চলে। ব্যস্ততম এই সড়কের দুই পাশ দখল করে রাখত এসব অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক। মানুষ চলাচলের জন্য এক,দুই হাত জায়গা রাস্তায় খালি থাকত।এতে বেশি সমস্যায় পড়তে হত স্কুল, কলেজের ছাত্র,ছাত্রীদের বিশেষ করে ছোট,ছোট ছেলে মেয়েদের। শুধু কি স্টেশনের সমস্যা নগরীর এই ব্যস্ততম সড়কে এসব যানের বেপরোয়া চলাচলে জনদুর্ভোগসহ ঘটত দুর্ঘটনা।আর বেশির ভাগ অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালাত নাবালক ছেলেরা।আর সুজন কে চাপা দেয়া সেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক আলী ও ছিল নাবালক। আজ বেশ কয়েকদিন হল পৌরসদরে চলছেনা এসব যান নেই পৌরসদরে যানজট নেই জনদুর্ভোগ। শুধু কি এসব কথা ভেবে দিরাই পৌরসদরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক বন্ধ চাচ্ছি অবশ্যই না। আমরা যে রাষ্ট্রে বসবাস করি সেই রাষ্ট্রের আইনত অবশ্যই মেনে চলতে হবে।জানা গেছে দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় স্থানীয় সরকার শাখা থেকে সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ আল আমিন স্বাক্ষরিত ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০১৯, রিটপিটিশন নং ৮৬৩৮/১৯ এর রুল নিশি অনুযায়ী দিরাই পৌরসভায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ইজিবাইক বন্ধের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।এছাড়া বিদ্যুতের অপচয় রোধে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা খুবি জরুরি। তাছাড়া দিরাই পৌর শহরের বাগবাড়ি এলাকায় গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ইজিবাইকের চাপায় প্রাণ হারিয়ে ছিল দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী স্বর্ণালী বেগম (৭)। আর এবছরের ২৩ অক্টোবর অতিরিক্ত স্পিডে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চাপায় মারা যায় সুজন দে(১৭)। এসব অবৈধ যানবাহনের চাপায় আর যাতে কোন মার কোল খালি নাহয় তাই আমরা এসব যানবাহন বন্ধ চাই। তাছাড়া বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী এটা যানবাহনের আওতায় পড়ে না,পৌরসভা কোনোক্রমেই এর লাইসেন্স দিতে পারে না। এসব অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক বন্ধ করলে দিরাইয়ের ২০০ থেকে ৩০০ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালক হয়ত বেকার হবে, অপরদিকে এসব ইজিবাইক অটোরিকশার কারণে শতশত পায়ে চালিত রিক্সা শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।এছাড়া রাষ্ট্রের আইনের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। অধিকাংশ এসব চালক আগে অন্য কর্মসংস্থানে জড়িত ছিল। আর এখন নাবালক, যুবক প্রতিনিয়ত জড়িত হচ্ছে এসব অবৈধ যানবাহনের সাথে আর যাতে কোন যুবক, নাবালক পেশা হিসেবে অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালনাকে বেচে নিতে না পরে তার জন্য অবৈধ অটোরিকশা ও ইজিবাইক বন্ধ করতে হবে। আর এতে যারা বেকার হয়ে পড়বে তাদের রাষ্ট্রীয় ভাবে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির অনুরোধ রইল।
লেখক- সাংবাদিক, সমাজকর্মী , সাংগঠনিক সম্পাদক, দিরাই অনলাইন প্রেসক্লান