নারীকে খুটিতে বেঁধে নির্যাতন, ইউএনও’র নির্দেশেও মামলা নেয়নি পুলিশ
কলম শক্তি ডেস্ক ঃ ফুলকপির চারা নষ্টের মিথ্যা অভিযোগ তুলে বগুড়ার শিবগঞ্জে এক নারীকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশ সত্যেও থানা-পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের অনন্তবালা গ্রামের শিল্পী বেগম (৪০) নামের এক নারীকে শুক্রবার সকালে জমিতে কপির চারা নষ্ট করার অভিযোগ একই গ্রামের রাফি ও তার লোকজন বাঁশের খুঁটির সাথে হাত-পা বেঁধে মারপিট করে। পরে তাকে থানা-পুলিশে সোপর্দ করে। থানা-পুলিশ ওই নারীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভ্রাম্যমাণ আদালতে নিয়ে যায়। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ঘটনার বিবরণ জানার পর ওই নারীকেই বাদী করে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা নিতে পুলিশকে নির্দেশনা দেন। কিন্তু থানা-পুলিশ কোনো মামলা না নিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান রবিবার এ বিষয়ে বলেন, ওই নারী পুলিশের কাছে নির্যাতনের বিষয়ে কোন অভিযোগ করেননি। তার পরেও মামলা নেয়ার জন্য তাকে খোঁজা হচ্ছে। তাকে পাওয়া গেলে নারী নির্যাতনের মামলা নেওয়া হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, বগুড়া সদর উপজেলার পলাশবাড়ি গ্রামের শিল্পী বেগম গৃহ নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। অনন্তবালা গ্রামের শহিদুলের ছেলে রাফি তাকে প্রায় ৯ মাস আগে বিয়ে করে। তারা বগুড়া শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বেশ কিছুদিন একসঙ্গেই ছিল। গত মাসে রাফি তার স্ত্রী শিল্পীকে রেখে গ্রামের বাড়ি চলে আসে। এরপর থেকে সে স্ত্রীর কোন খোঁজখবর না নেওয়ায় শুক্রবার সকালে অনন্তবালা গ্রামে রাফির বাড়িতে যান শিল্পী। রাফি ও তার পরিবারের লোকজন এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ফুলকপি খেতে নিয়ে গিয়ে একটি বাঁশের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারপিট করে। পরে স্থানীয় গ্রাম পুলিশের (চৌকিদার) মাধ্যমে তাকে শিবগঞ্জ থানায় পাঠানো হয়। শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ওই নারী থানায় এসে তাকে নির্যাতনের কথা জানাননি। তবে যে গ্রাম পুলিশ তাকে থানায় সোপর্দ করে সে জানিয়েছে খেতের ফসল নষ্ট করায় তাকে গ্রামবাসী আটক করে থানায় পাঠিয়েছে। এ কারণে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তিনি প্রকৃত ঘটনা বলার পর ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছেন। ওই নারীর কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণের জন্য তার সন্ধান করা হচ্ছে। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর হোসেন বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেয়ার মতো ওই নারী বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ ছিল না। বরং তাকেই মারপিট করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ কারণে তাকে বাদী করে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেয়ার জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সূত্রঃ দৈনিক দেশ রুপান্তর