কলম শক্তি ডেস্ক ঃ সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের গোবিন্দগঞ্জ থেকে লামাকাজি পর্যন্ত যানজট স্থায়ী হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে ওই এলাকায় ৩-৪ ঘণ্টা সময় ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। ঠিকাদার পরিকল্পিতভাবে সড়কের নির্মাণকাজ না করানোয় যানজটের সৃষ্টি বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। এই সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টার গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের ৬৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে চলতি বছরের শুরু থেকে। এই সড়কের ১৮ থেকে ২৪ ফুট চওড়াসহ মজবুত করতে ১৪০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দে এই কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। ২০১৬ সালে প্রকল্প নেওয়ার পর এক বছর আইনি জটিলতায় কাজ শুরুই করা যায়নি সময় মতো। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে কার্যাদেশ দেওয়ার পর এখনো অর্ধেক কাজও হয়নি বলে অভিযোগ আছে। বর্তমানে সিলেট-গোবিন্দগঞ্জ, গোবিন্দগঞ্জ-ডাবরঘাট ও ডাবরঘাট-সুনামগঞ্জ এই তিন অংশে ভাগ করে মহাসড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে। কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স জন্মভূমি নির্মাতা অ্যান্ড ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী জনজেবি কনস্ট্রাকশন। প্রকল্প এলাকায় দুই দিকে তিন ফুট করে গভীর ও প্রস্থে উন্নত পাথর ও বালু দিয়ে ভরাটের কথা ছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো তার বদলে দুই থেকে দেড় ফুট গভীরে গিয়ে বালু ও পাথর দিয়ে ভরাট করতে দেখা গেছে। তাছাড়া ষাটের দশকে এই মহাসড়কে দুই দিকসহ সড়কের নিচের পুরো অংশে বড় বড় বোল্ডার বসানো হয়েছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ- এসব পাথর গত ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে ট্রাক ভরে সরিয়ে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। ভুক্তভোগীরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে লামাকাজী এলাকায় সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ ধরেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে একসঙ্গে দুই সাইটের কাজ শুরু করায় এখানে স্থায়ী যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বিকল্প যাতায়াতের সুযোগ না রাখায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন যাত্রীরা। গত ৩-৪ দিন ধরে এই এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে যানজটে যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বাসযাত্রী সোহাগ মিয়া বলেন, আমার প্রতিদিনই সিলেট আসতে হয়। গত চারদিন ধরে আসতে-যেতেই দুই ঘণ্টারও বেশি সময় আমি যানজটে আটকে ছিলাম। আমার মতো অনেক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছিলেন। বিশেষ করে নারী ও শিশু, বৃদ্ধ এবং রোগীরা কষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, ঠিকাদার পরিকল্পিতভাবে কাজ বাস্তবায়ন না করায় এবং বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা না রাখায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সিলেটের অংশে কাজের জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই এই যানজট থাকবে না। সুনামগঞ্জ অংশে এখন আর যানজট হচ্ছে না এবং যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না। তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের প্রাক্কলন মেনে এবং যাত্রীদের দুর্ভোগে না ফেলে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছি।
সূত্রঃ দৈনিক সুনামকন্ঠ