জাতীয়

দিরাই-শাল্লা সড়ক, ৯১ কোটি টাকা জলে

কলম শক্তি ডেস্ক :: সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী শাল্লা উপজেলার সড়ক। গত তিন বছরের বন্যা এবং এবারের চার দফা বন্যায় ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। শাল্লা উপজেলার সঙ্গে সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সংযোগ স্থাপনকারী সড়কের গত তিন বছরের বন্যা ও চলতি বছরে চার দফা বন্যায় এক তৃতীয়াংশ বিলীন হয়েছে। এতে সরকারের ৯১ কোটি টাকা নষ্ট হয়েছে বলে মনে করে উপজেলাবাসী। শত কোটি টাকার সড়ক আড়াই বছরে বিলীন হওয়ায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে ১৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ২০১০ সালে ১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। দুই দিকে বিশাল হাওর থাকায় সড়কটি নির্মাণ ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। ২০১৩ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সময় বাড়ানো হয়। সড়ক বিভাগের মতে একটি অসমাপ্ত প্রকল্প হিসেবে কাজ বন্ধ হয়ে যায় ২০১৭ সালে। ১১০ কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে সরকার ওই সময় পর্যন্ত ৯১ কোটি টাকা ছাড় করেছিল। নকশা অনুযায়ী চারটি সেতু ও ১৫টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কাজ হয়েছিল ৬০ শতাংশ। কাজ বাকি থাকলেও মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে জনগণ শাল্লা উপজেলা সদর থেকে জেলা সদরে যাতায়াত করতে পারত। এতেই তারা খুশি ছিল। কিন্তু পর পর কয়েকটি বন্যায় নির্মিত সড়কটির সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকা সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। চলতি বছরের চার দফা বন্যায় আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়কটি। বন্যায় দুটি কালভার্ট উল্টে অকেজো হয়ে গেছে। মাছুয়াখাড়া নামক স্থানে প্রায় ১২০ মিটার সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে হাওরে। তাই উপজেলাবাসীর একমাত্র সড়ক দিয়ে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। বর্ষায় নৌপথে যাতায়াত করলেও হেমন্তে হাঁটা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না বলে মনে করছে তারা। সড়ক বিভাগের মতে, এ অবস্থায় শাল্লা উপজেলার একমাত্র সড়কটি ‘মদনপুর, দিরাই, শাল্লা, জলসুখা, আজমিরিগঞ্জ’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে সংস্কার-নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সড়কের প্রস্থ বৃদ্ধি, নিচু এলাকায় আরো তিন ফুট উচ্চতা বৃদ্ধি, সাড়ে ১৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কে দুই দিকে স্লোপ প্রটেকশন থাকবে। আরো একটি সেতু ও সাতটি কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনটি গার্ডার সেতু ও চারটি বাজারে আরসিসি ইউড্রেন নির্মাণের কথাও বলা হয়েছে। এসব বিষয় নতুন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে সম্প্রতি ৫৫৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গত মাসে সড়ক বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। গত ১ অক্টোবর গিয়ে দেখা যায়, শাল্লা ডিগ্রি কলেজের সামনের সেতুর পর থেকে ভাঙনের শুরু। নোয়াগাঁও, আনন্দপুর, আঙ্গাউড়া, কাশীপুর, মাছুয়াখাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। জনগণ এখন নৌকায় করে উপজেলা সদর ও দিরাই সদরে এসে জেলা বা বিভাগীয় শহরে যাতায়াত করে।

দৈনিক কালের কন্ঠ থেকে সংগৃহিত

Related Articles

Back to top button
Share via
Copy link
Powered by Social Snap