ইসলামিক ফাউন্ডেশনে দূর্নীতি ; অনিয়মে ধরা খেয়ে ৭৩ কোটি টাকা ফেরত দিলেন ডিজি
কলম শক্তি ডেস্ক ঃ সরকারি বিশেষ নিরীক্ষায় অনিয়ম ধরা পড়ার পর দুই দফায় ৭৩ কোটি টাকা ফেরত দিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো. আফজাল। প্রথম দফায় গত ২৩ অক্টোবর সোনালী ব্যাংক পাবলিক সার্ভিস কমিশন শাখায় ১টি চেকের মাধ্যমে ৩২ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় গত ৩১ অক্টোবর একই শাখায় তিনটি চেকের মাধ্যমে প্রায় ৪১ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেন তিনি। সম্প্রতি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি পরীক্ষার জন্য সরকার একটি বিশেষ নিরীক্ষা দল প্রেরণ করে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব বাংলাদেশ কার্যালয় থেকে এ নিরীক্ষা দল পাঠানো হয়। এ নিরীক্ষা দল অন্যান্য অনিয়মের সঙ্গে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পে কয়েকটি বড়ো ধরনের আর্থিক ঘাপলা খুঁজে পান। তারা কেবল ০৯.০৭.২০১৯ থেকে ০৮.০৮.২০১৯ পর্যন্ত সময়ে প্রকল্পের ডিপিপি, বরাদ্দ ও ব্যয়, ক্যাশবহি, লেজার বুক ও রেকর্ডপত্র যাচাই করে ৩১,৯৯,১৫,২২০/- টাকার একটি বড়ো অনিয়ম খুঁজে পান। বিষয়টি নিয়ে মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তার পক্ষ থেকে বলা হয় এ টাকা ৬৪ জেলায় প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে খবর নিলে দেখা যায় সেখানে এ টাকা পাঠানো হয়নি। অবস্থা বেগতিক দেখে গত ২৩ অক্টোবর মহাপরিচালক সামীম মো. আফজাল একদিনেই চেক নম্বর ১৪৬০৭০৮ মারফত ৩১,৯৯,১৫,২২০/- টাকা ফেরত দেন। এছাড়া অন্যান্য অনিয়ম উন্মোচিত হওয়ায় একই ব্যাংকে আরো তিনটি চেকের মাধ্যমে চালান নম্বর টি-৯৮, চালান নম্বর টি-৯৯ এবং চালান নম্বর টি-১০০ মারফত মোট ৪১,২৭,৩০,০৪৪ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়। সরকারি কোষাগারে এত টাকা ফেরত দেওয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন সরকারের বিশেষ নিরীক্ষা দলের সদস্যবৃন্দ। তারা বলেন, সরকারের বিশেষ নিরীক্ষা দল না এলে এ অর্থ কখনোই পাওয়া যেত না। এদিকে মহাপরিচালক সামীম মো. আফজালের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর গত ৩ নভেম্বর এক জরুরি সভায় মিলিত হন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বলেন, মহাপরিচালকের দুর্নীতি নজিরবিহীন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনিছুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এই টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্য ছিল ডিজি সাহেবের। এ কারণেই তিনি এ টাকা নিজ জিম্মায় রেখে দিয়েছিলেন। গত পাঁচ মাস আগে বিষয়টি ধরা পড়ে। ওই সময় একটি তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়। এ কমিটি তদন্ত ও অনুসন্ধান করে ডিজির অনিয়মের সন্ধান পায়। এরপর একটি অডিট কমিটি করা হয়। এ কমিটিকে ম্যানেজ করার জন্য ডিজি সাহেব বহু চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত হয়তো টাকাটা কোষাগারে ফেরত দিয়েছেন।