হাসপাতালের ফ্লোরে পড়ে আছে শিশুটির নিথর দেহ
কলম শক্তি ডেস্ক ঃ ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত পৌনে ৩টা। চারদিকে নীরবতার চাদর। সবাই ঘুমে বিভোর। হঠাৎ বিকট শব্দ। এরপর চারদিক রক্তাক্ত। বাঁচার আর্তনাদ, চিৎকার আর আহাজারি।মঙ্গলবার রাত পৌনে ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার মধ্যে সংঘর্ষ হলে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন অর্ধশতাধিক যাত্রী। অনেকেই এখনো খুঁজে পাননি স্বজনদের। এরই মধ্যে দুটি শিশুর রক্তাক্ত দেহ মনে দাগ কেটেছে সবার। এদের মধ্যে একটি শিশু জীবিত থাকলেও অপর শিশুর নিথর দেহ পড়ে আছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের ফ্লোরে। তার নাম সোহা (৩)। সে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সোহেলের মেয়ে। সোহার মামা জামাল উদ্দিন জানান, ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসি। হাসপাতালের ফ্লোরে সোহাকে এভাবে দেখব কল্পনাও করিনি। হাসপাতালের ফ্লোরে সোহার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে কাঁদছে সবাই। হাসপাতালে আনার পর তার পরিচয় পাওয়া না গেলেও কিছুক্ষণ পর জানা যায় হবিগঞ্জের সোহেলের মেয়ে সোহা। ততক্ষণ তার লাশের পাশে কেউ ছিল না। রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়া জাহান জানান, সিলেট থেকে ছেড়ে উদয়ন এক্সপ্রেস যাচ্ছিল চট্টগ্রামে। আর তূর্ণা নিশীথা চট্টগ্রাম থেকে যাচ্ছিল ঢাকায়। মন্দবাগে দুই ট্রেনের ক্রসিংয়ের সময় সিগন্যাল পেয়ে উদয়ন মেইন লাইন থেকে লুপ লাইনে প্রবেশ করছিল। ট্রেনের নয়টি বগি লুপ লাইনে চলে যাওয়ার পর দশম বগিতে আঘাত করে তূর্ণা নিশীথা। ওই ট্রেনের লোকোমাস্টার (চালক) সিগন্যাল অমান্য করায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে আমরা জেনেছি। দুর্ঘটনার পরপরই রেল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস, ও পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার কাজে যোগ দেন।