চোর যখন ইউপি সদস্য ; চুরির দায়ে শ্রীঘরে
কলম শক্তি ডেস্ক ঃ নিজ এলাকায় ‘চুরির কীর্তি’ তার বেশ পুরনো। পার্থক্য এখন সামাজিক পরিচয়ে। আগে এলাকায় চুরির দায়ে অভিযুক্ত ফরিদুল ইসলাম কুটিকে সংশোধনের সুযোগ দিতে এবার করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। তাতে বদল হয়নি স্বভাবের। ঘরবাড়িতে নয় এবার নিমার্ণ কাজের রড চুরি করে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন তিনি। সুনামগঞ্জের দরগাপাশা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য ফরিদুল ইসলাম কুটির এহেন কর্মকাণ্ড নিয়ে চলছে প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা। গ্রেপ্তারের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দরগাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন বলেন, ‘ কুটি মেম্বার আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের লজ্জা। তার বিরুদ্ধে আগেও চুরির অভিযোগ ছিল। তাকে ভালো করতেই মানুষ ভোট দিয়ে ইউপি সদস্য করেছিলেন। কিন্তু তার চরিত্র সংশোধন করতে পারেনি। এই ঘটনায় মানুষজন ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। ‘ দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার এসআই জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ ইউপি সদস্য কুটির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চুরির সঙ্গে জড়িত বলে তথ্য প্রমাণ রয়েছে। এবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে চোরাই রডসহ হাতেনাতে ধরেছি। পরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান চুরি যাওয়া রড উদ্ধার হয়েছে। ‘ স্থানীয় সূত্র জানায়, বিভিন্ন স্থানে চুরি থেকে ফেরাতে ও চরিত্র সংশোধনের জন্য এলাকাবাসী গত নির্বাচনে ফরিদুল ইসলাম কুটিকে ভোট দিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত করেন। কিন্তু জনগণের ভালোবাসা ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ইউপি সদস্য থাকা অবস্থায় সরকারি কাজে ব্যবহৃত রড চুরি করে ধরা পড়েছেন। এলাকাবাসী জানান, পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি সড়কে কাজ শুরু হয়েছে কিছু দিন আগে। তার অংশ হিসেবে এমএম বিল্ডার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় আব্দুর রশিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে একটি ব্রিজ নিমার্ণ করছে। সেখানে রড এনে মজুদ করা হচ্ছিল। কিন্তু ধাপে ধাপে রড চুরি হওয়ায় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। তখন পুলিশ তদন্তকালে জানতে পারে চুরির এ ঘটনায় ইউপি মেম্বার কুটি ও তার সহযোগীরা জড়িত। গত বৃহস্পতিবার রাতে অনেকটা ফাঁদ পেতে আটক করা হয় ফরিদুল ইসলাম কুটি ও তার সহযোগী সিএনজি চালক দেলোয়ার হোসেনকে। তাদের হেফাজতে পাওয়া যায় ২শ কেজি রড। শনিবার উদ্ধার হয় আরো ৩শ কেজি রড। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর রবিবার বিকেলে তল্লাশি চলে কুটির বাড়িতে। বাড়ির আশপাশের ডোবা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ৩টন রড। এ ঘটনায় এমএম বিল্ডার্সের হিসাবরক্ষক জামাল আহমদ বাদি হয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।