কলম শক্তি ডেস্ক ঃ ২০০৯ সালের আগে যারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন তারা এবার আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে থাকতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের এই বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ২০০৯ সালের আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায়। ঐ সময়ে প্রায় ২/৩ অংশের বেশি আসন পেয়ে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় বসে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মাঠ পর্যায়ের গবেষণা থেকে যে তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এরপর ২০০৯ -১৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিপুল পরিমাণ অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে এবং এদের একটি বড় অংশ বিএনপি-জায়ায়াত থেকে ঢোকা। এরা অর্থ, ক্ষমতা এবং নানা কুটকৌশলের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ের কমিটিগুলো দখল করে ফেলেছে। আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, উপজেলা পর্যায়ে কমিটির মধ্যে ২/৩ অংশ পদই দখল করে আছে এই সমস্ত অনুপ্রবেশকারীরা। আর এই প্রেক্ষাপটেই আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগের উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় বা মহানগর পর্যায়ে কোনো কমিটিতে থাকতে গেলে তাকে অবশ্যই ২০০৯ সালের আগে থেকে আওয়ামী লীগে থাকতে হবে।
পাশাপাশি অন্যান্য যে বিষয়গুলো তার পরীক্ষা করা হবে কমিটিতে রাখার আগে তার মধ্যে রয়েছে; ১. আওয়ামী লীগে তিনি কবে যোগদান করেছেন এবং কি প্রক্রিয়ায় যোগ দান করেছেন? তিনি কি অন্য কোনো দল থেকে যোগদান করেছেন নাকি শুরু থেকে ছাত্রলীগ করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। যদি শুরু থেকে ছাত্রলীগ করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন তাহলে তিনি কমিটিতে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। ২. ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট তার ভূমিকা কি ছিল? সে সময় যদি তিনি জন্মগ্রহণ না করে থাকেন তাহলে তার পিতা ও নিকট আত্মীয়দের ভূমিকা কি ছিল সেটা খতিয়ে দেখা হবে? আর সেসময় যদি তিনি রাজনীতি করার মতো বয়সে থাকেন, তাহলে তার অবস্থান মূল্যায়ন করা হবে। ৩. ২০০১ সালের নির্বাচনের পর তার ভূমিকা কি ছিল, তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন কিনা, বিএনপি জামাত জোট সরকারের দ্বারা অত্যাচারিত হয়েছিলেন কিনা। ৪. ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময়ে তিনি কি কোনোভাবে নির্যাতিত, নিপীড়িত বা আহত হয়েছিলেন? ৫. ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেন আসার পরে তার ভূমিকা কি ছিল, তিনি সংস্কারপন্থী ছিলেন কিনা। ৬. উপজেলা নির্বাচন, সংসদ নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বা অন্য কোনো নির্বাচনে তিনি দলের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন কিনা। ৭. দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোন নির্বাচন করেছিলেন কিনা। ৮. দলের প্রার্থীকে হারানোর জন্য বা দলের প্রার্থীর বিরোধীতা করার কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তার বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছিল কিনা। তিনি মাদক, সন্ত্রাস বা অন্য কোন অপরাধ তৎপরতার সঙ্গে তিনি কখনো জড়িত ছিলেন মর্মে প্রমাণিত হয়েছিল কিনা। ৯. টেন্ডার বা অনৈতিক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে কিনা। ১০. তিনি সরকারী এবং প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে তিনি কোন হস্তক্ষেপ করেছিলেন কিনা। এই সমস্ত বিষয়গুলোর সার্বিক বিবেচনা করার পরই একজনকে আওয়ামী লীগের কমিটিতে নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মূল বিষয়টি হলো ১০ বছর আওয়ামী লীগ না করলে কেউই কোন কমিটিতে- হোক না তা তৃণমূল কিংবা উচ্চ, তাতে জায়গা পাবেন না।