ছাতকে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ ; আহত অর্ধশতাধিক
কলম শক্তি ডেস্ক ঃ ছাতকে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। উপজেলার জাউয়াবাজার এলাকায় বৃস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় এমপি মুহিবুর রহমান মানিক ও পৌরসভা মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতংকে বন্ধ রয়েছে বাজারের অধিকাংশ দোকান-পাট। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৭৬ রাউন্ড টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছাতক-দোয়ারাবাজার আসনের এমপি মহিবুর রহমান মানিক ও জেলা আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি প্রদান করা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে চাঁপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাউয়াবাজারের খিদ্রাকাপন গ্রামের শাজহন চৌধুরীর বাড়ির মাঠে জাউয়াবাজার, সিংচাপইড়, চরমহল্লা, দক্ষিণ খুরমা ও ভাঁতগাও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভার আয়োজন করেন মুকুট সমর্থকরা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছাতক পৌর সভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আবরু মিয়া তালুকদার ও জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখার কথা ছিল। সভা শুরুর পর বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে কর্মী সমর্থকরা মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করেন। সাড়ে তিনটার দিকে একটি মিছিল জাউয়াবাজার অতিক্রমকালে এমপি মানিকের ভাই ইউপি চেয়ারম্যান বিলালের নেতৃত্বে হামলা করা হয়। হামলার পর উভয় পক্ষ জাউয়বাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে । লটি-সোঠা ও ইটপাঠকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়। সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় জাউয়াবাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আতংকে বাজারের সকল দোকান-পাঠ বন্ধ হয়ে যায়। সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের উপর জাউয়াবাজারের এ সংঘর্ষের কারণে এ সড়কে কয়েক শত যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। জাউয়াবাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ, থানা ও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ২৬ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ৫০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার বিল্লাল আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সংঘর্ষে আহত মাসুদ মিয়া, রুবেল মিয়া, রিপন আহমদ, কয়েছ মিয়া, কালা শাহ, সুজন মিয়া, কবির আহমদ, ইমরান আহমদ, শিমুল মিয়া, রেজাউল করিমসহ আহতদের কৈতক হাসপাতাল ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছাতক যুবলীগের সভাপতি ও জাউয়াবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন জানান, এমপি মুহিবুর রহমান মানিককে কটুক্তি করে প্রতিপক্ষ জাউয়াবাজারে একটি মিছিল বের করলে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বাঁধা দেয়ার পর সংঘর্ষ শুরু হয়। জাউয়াবাজার ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি রেজা মিয়া তালুকদার জানান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট সাহেবকে কটুক্তি করার প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করেছিলাম। ওই মিছিলে উত্তর খুরমা ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদের নেতৃত্বে আমাদের মিছিলে হামলা চালানো হয়েছে। ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।