সারাদেশ

কবি গিয়াসউদ্দিন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে গান চুরির অভিযোগে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার প্রখ্যাত লোককবি গিয়াস উদ্দিন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগটি দায়ের করেছেন সুনামগঞ্জের সাংস্কৃতিক সংগঠন সুরমা তরঙ্গ শিল্পী পরিষদ এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক গীতিকার নির্মল কর জনি। অভিযোগে প্রকাশ,সুনামগঞ্জ হচ্ছে পঞ্চরত্ম বাউলের দেশ। এ জেলার প্রধান পঞ্চ লোককবিরা হচ্ছেন বৈষ্ণব কবি রাধারমন দত্ত,মরমী কবি হাসন রাজা,গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন),বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম ও জ্ঞানের সাগর দূর্বিণ শাহ। যাদের গান রচনায় মানবপ্রেম ও দেশপ্রেম এর চিত্র নানাভাবে ফুটে উঠেছে। কিন্তু এই সাধকদের গান রচনা সুর তাল লয় অনুকরন ও অনুসরণ করে দেশ স্বাধীনের পর কিছু কিছু স্বঘোষিত গীতিকার এর আবির্ভাব ঘটেছে যাদেরকে নিয়ে সত্যিই আমরা লজ্জিত ও নিন্দিত। এরকম একজন গীতিকারের নাম গিয়াস উদ্দিন। যিনি তার গানের ওস্তাদ বাউল কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন) সাহেবের গানের কথা ও সুর নকল করে গান রচনার পাশাপাশি বাউল কামাল পাশার অনেক গানে নিজের নাম সংযোজন করত: বই প্রকাশ করেছেন। এছাড়া কোন কোন গবেষক কোনপ্রকার বাচ বিচার না করেই একতরফাভাবে এসব গান গিয়াস উদ্দিনের নামে প্রকাশ ও প্রচার করেছেন। ১৮/২/২০২০ইং মঙ্গলবার গোবিন্দগঞ্জ বালুর মাঠে গিয়াস উদ্দিন লোক উৎসব-২০২০ইং নামে একটি উৎসবের আয়োজন করত: বিতর্কিত ও আলোচিত গানগুলো প্রকাশের ও প্রচারনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আয়োজকদের অধিকাংশরাই ছিলেন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। ছাতক উপজেলার ছৈলাআফজলাবাদ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামে ১৯৩৫ সালের ১৪ ই আগষ্ট গিয়াস উদ্দিন আহমদ এর জন্ম হয়। তাঁর বাবা ফতেহ উল্লাহ এবং মাতার নাম অমুরতা বিবি। ২০০৫ সালে ১৬ এপ্রিল চিকিৎসাধিন অবস্থায় হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তিনি তার নামে কোন লোক উৎসব করেননি। এছাড়া ২০০৫-২০২০ সালের আগেও তার পরিবার পরিজন কিংবা স্থানীয় কোন সংগঠন গিয়াস উদ্দিন লোক উৎসবের আয়োজন করেনি। বর্তমানে লোক উৎসবের আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বিশেষ মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফায়দা হাছিল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,গানের সম্রাট বাউল কামাল পাশা (কামাল উদ্দিন জন্ম ১৯০১ মৃত্যু ১৯৮৫) সাহেবের প্রায় এক হাজারের মতো গান চিহ্নিত করে সুনামগঞ্জের আমল গ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪৩ পৃষ্টার ২১৫নং হলফনামা সম্পাদন করেছেন বাউল মজনু পাশা। ঐ হলফনামার প্রত্যেকটি পাতায় ৩/১১/২০১৩ ইং তারিখে স্বাক্ষর করেছেন সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারিক আদালত-১ এর বিচারক মোছাঃ বিলকিছ আক্তার। এর আগে ৩১/১০/২০১৩ইং ঐ হলফনামার প্রতিটি পাতায় সীলসহ স্বাক্ষর করেছেন এডভোকেট হোসেন আহমদ। এডভোকেট হোসেন আহমদ ছিলেন প্রখ্যাত সাধক দূর্বিণ শাহের আইনজীবি। যিনি বর্তমানে আমেরিকায় আছেন। পাশাপাশি ৪৭ পৃষ্টার ২২৫নং হলফনামা সম্পাদন করেছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভাতাভোগী আরেক সংগীত শিল্পী বাউল সাহেব উদ্দিন। উক্ত হলফনামার প্রত্যেকটি পাতায় ১৯/১১/২০১৩ ইং তারিখে স্বাক্ষরকরেছেন সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারিক আদালত-১ এর বিচারক মোছাঃ বিলকিছ আক্তার। এর আগে ১৯/১১/২০১৩ইং ঐ হলফনামার প্রতিটি পাতায় সীলসহ স্বাক্ষর করেছেন এডভোকেট শাহীনূর রহমান। হলফনামা দুটির (ঘ) প্যারায় তারা পৃথক পৃথকভাবে উল্লেখ করেন, “সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ ইং প্রকাশিত “মরিলে কান্দিসনা আমার দায়”গ্রন্থের ৮৯ নং গান, প্রান কান্দে মন কান্দেরে কান্দে আমার হিয়া,১১০ নং গান.মুখ মুছিয়া বিড়ালে কয় কুনি ব্যাঙ্গে দুধ খাইছে,টেমটুম লইয়া বাচাবাছি হিজল আর বরুন গাছে ১২৯ নং গান.প্রেমের মরা জলে ডুবেনা, ১৩১.নং গান সিলেটবাসীর কিসের ভয়, যে মাটিতে শাহজালাল শুইয়ে আছেন সবসময় ১৮৬ নং গান.কঠিন রোগ থাকেনা গায়ে যে পায় তোমার শুভ দেখা,ধন্যবাদ কাগজের টাকা,১৮৩.নং গান তোরা দেখছনি সকলে/পাগলা হাতি পড়লো ধরা মাকড়শারই জালে, ১৫১.এ পোড়া প্রানেগো সখী জ্বালাতন আর সয়না এই ৭টি গান মাঠপর্যায়ে বাউল কামাল পাশার নামে এবং একই বইয়ের ১৮৪.নং গান পাগলা মন আমার জুড়া দিয়া চালাবে গাড়ি কয়দিন আর” গানটি দূর্বীন শাহের নামে গাওয়া হচ্ছে। আমার জানামতে গিয়াস উদ্দিন আহমদ এর জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৪ ই আগষ্ট। তার বইটি প্রকাশ করেছে গিয়াসগীতি প্রকাশনা প্রকল্প। গীতিকার গিয়াস উদ্দিন এবং প্রকাশনা প্রকল্পের সাথে জড়িতদের বহু বছর পূর্বে বাউল কামাল পাশা ও দূর্বীন শাহের জন্ম। এই গানগুলোর রচয়িতা যে তারা এ ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নাই। আমি শুনেছি গিয়াস উদ্দিন এর কাছে বাউল কামাল পাশা তার গানের ৩টি পান্ডুলিপি দিয়েছিলেন পত্রিকায় লেখালেখি করার জন্য ”। কিন্তু ওস্তাদ কামালের পান্ডুলিপির গানগুলি কবি গিয়াস উদ্দিন তার ওস্তাদের নামে প্রকাশ না করে নিজের নামে নকল পান্ডুলিপি প্রস্তুত করে কামালগীতিকে নিজের নামে প্রচার করে পরিকল্পিত গান চুরির অপরাধ করে গেছেন। এ থেকে প্রমাণিত হয় কবি গিয়াস উদ্দিন উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁর গানের ওস্তাদ বাউল কামাল পাশার গানের ভনিতা পরিবর্তন করে নিজের নামে জাহির করেছেন। লন্ডনে অবস্থানরত প্রবাসী গীতিকার নবীন সিদ্দিক, যোদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এস.এন.এম মাহমুদুর রসুল,দিরাইয়ের কবি গীতিকার আব্দুর রহমান,প্রবীণ বাউল শিল্পী সাহেব উদ্দিন ও সাংবাদিক গবেষক আল-হেলালসহ আরো অনেকে বিষয়গুলো ভালভাবে অবগত আছেন। শুধু ওস্তাদ কামাল পাশার গান চুরি করাই নয় ১৯৭০ সালে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আব্দুল হক ও সামসু মিয়া চৌধুরীর নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি মৌলভী ফজলুল করিমের পক্ষে নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন গিয়াস উদ্দিন। ৭১ সালে সুনামগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির সক্রিয় নেতা ও ছাতক থানা শান্তি কমিটির সভাপতি মৌলভী ফজলুল করিম এর ঘনিষ্ট সহযোগী ছিলেন তিনি। শিবনগর গ্রামের চিহ্নিত রাজাকার কবির মিয়া ও দবির মিয়া উভয়ের পিতামৃত জালু উল্লাহ,আইন উল্লাহ পিতামৃত ছালিম উল্লাহ ও নুর উদ্দিন পিতামৃত সরাদ আলী কে রাজাকার বাহিনীতে তিনিই রিক্রুট করেন তার গোত্রীয় আত্মীয় হিসেবে। তৎকালীন ছৈলা,মইনপুর ও দোলারবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানী পতাকা উত্তোলনে মামা কালা মিয়া ও গিয়াস উদ্দিন নেতৃত্ব দিতেন বলেও জানা যায়। উল্লেখ্য ঐ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাত থেকে কলে কৌশলে আত্মরক্ষা করলেও গিয়াস উদ্দিন এর মতো আরেক প্রখ্যাত কবি রিয়াছত আলী মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধৃত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতেই নিহত হন। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে রাজাকার আলবদরসহ পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগীতা করেছেন গিয়াস উদ্দিন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ইং ছাতক শত্রæমুক্ত করার পরও গোবিন্দগঞ্জ হানাদারদের দখলে ছিল। পাক বাহিনীর ব্যাংকার ছিল ছৈলা গ্রামে। শিবনগর নিবাসী মৃত ফতেহ আলীর পুত্র কবি গিয়াস উদ্দিন (সেই সময় কবি গীতিকার বা সাংবাদিক নন) কুখ্যাত দালাল,রাজাকার ও তার মামা কালা মিয়াসহ পাক বাহিনীকে গাইড করতেন ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এর ম্যানাজার হিসেবে। ছাতক শত্রæমুক্ত করার পর মুক্তিযোদ্ধারা দালাল কালা মিয়া চেয়ারম্যানের বাড়িসহ হানাদার বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে আক্রমন ও অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় দালাল কালা মিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযানে পালিয়ে আত্মরক্ষা করলেও ঐ বাড়িতে অর্থাৎ ছৈলা গ্রামস্থিত কালা মিয়ার বাড়িতে পলাতক থাকাবস্থায় আটক হন গিয়াস উদ্দিন। পলাতক রাজাকার অবস্থায় গিয়াস উদ্দিন কে এই আটকের কথা স্বীকার করেছেন ছাতকের প্রবীণ সাংবাদিক ছাতক কন্ঠ পত্রিকার সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ সাহেব। যার মোবাইল নম্বর ০১৭১২-২১৯৩২৪। এছাড়া গিয়াস উদ্দিন নামের এক রাজাকার কে আটক করার জন্য অভিযান পরিচালনা করেছেন বলে আমাদেরকে বলে গেছেন,অধুনালুপ্ত দৈনিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সালেহ চৌধুরী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দুই জন রাজাকার সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। এদের একজন হচ্ছেন সুনামগঞ্জের নতুনপাড়া নিবাসী তজম্মুল হোসেন চৌধুরী কাচা মিয়া এবং অপরজন হলেন ছাতকের ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের গিয়াস উদ্দিন আহমদ। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এরা দুজনই দৈনিক যুগভেরী পত্রিকায় সাংবাদিকতা করতেন। তখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের অর্থাৎ ৭৫ এর পট পরিবর্তনের পর কেউ এ বিষয়টি আদৌ খেয়াল করেননি। এখন দেখা যাচ্ছে রাজাকারকে গীতিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে আর্থিক ও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অসদুদ্দেশ্যে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তথাকথিত লোক উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এসব ঘটনার জন্য কবি গিয়াস উদ্দিন এর পুত্র আয়োজক আনোয়ার হোসেন রনি কে দায়ী করা হয়েছে অভিযোগে লিখিত অভিযোগে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,বিতর্কিত ঐ লোক উৎসবে আতিথ্য গ্রহন করেননি সুনামগঞ্জ ৫ নির্বাচনী এলাকার বর্তমান সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক এমপি,সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক,জেলা পুলিশ সুপার ও গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ আখলাকুর রহমান এবং আওয়ামীলীগের সুনামগঞ্জ জেলা ও ছাতক উপজেলার কোন নেতাকর্মী। অভিযোগে গীতিকার গিয়াস উদ্দিন নামের সকল বই পুস্তক জব্দ,বাউল কামাল পাশা ও দূর্বিণ শাহের আত্মসাৎকৃত গান উদ্ধার এবং গোবিন্দগঞ্জ বালুর মাঠের লোক উৎসব-২০২০ এর ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানানো হয়। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুল আহাদ বলেন,আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করবো। ছাতকের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম কবির অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে বলেন,অভিযোগে লোক উৎসব বন্ধের দাবী করা হয়েছিল। আমরা দূর্বিণ শাহ লোক উৎসবের ব্যাপারে ব্যস্ত আছি। পরে অভিযোগের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা যায় কিনা সে ব্যাপারে বিবেচনা করে দেখবো। সুনামগঞ্জের বিশিষ্ট লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু বলেন, আমার লিখিত মুক্তিযুদ্ধে সুনামগঞ্জ বইয়ে পলাতক দালাল রাজাকার আটকের ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত লেখা আছে। এখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে আমরা কুথ্যাত দালাল কালা মিয়াকে আটক করতে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি। আমাদের অভিযানে গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আটক হয়েছিলেন এই কথা স্পষ্টভাবে বইয়ে উল্লেখ করা আছে। বাউল শাহ আব্দুল করিমের শিষ্য বিশিষ্ট গীতিকার আব্দুর রহমান বলেন, সুফি সাধক ক্বারী আমির উদ্দিন যেমন মন পাগলরে দিল পাগলরে ওমন পাগল হইলায় কার লাইগ্যারে গানটি কামাল কবির ভনিতায় গেয়েছেন তেমনি “জ্ঞানী মানুষ অজ্ঞান হইয়া যে দেশেতে দিন কাটায় এমন একটা দেশে থাকতে কোন মানুষের মনে চায়” এই গানটি কামাল উদ্দিন সাহেবের ভনিতায় সাধক কবি দূর্বিণ শাহ,দূর্বিণ শাহের শিষ্য বাউল তছকীর আলীসহ অনেক নামকরা বাউলরা কামাল ভনিতায় গেয়েছেন বলে আমি স্বচক্ষে দেখেছি। এখন শুনছি এসব কামালগীতি গিয়াস উদ্দিন ভাই তার শেষ বিয়ের সানাইয়ে নিজের নামে প্রকাশ করেছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। শাহ আব্দুল করিমের শিষ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবী ভাতাভোগী আব্দুল কাইয়্যুম বলেন,আমি সুবেদার খুর্শেদ ও হরিনাপাটির শহীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ছাতক অভিযানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেই। গিয়াস উদ্দিন কে আটক এর ব্যাপারে আমিও সবকিছু জানি। শুনা মাইগো মাই বিয়া করাইয়া মোরে বানাইলায় জামাইসহ অনেক মূল্যবান গান আছে বাউল কামাল উদ্দিনের এইসব গানে গিয়াস উদ্দিন তার নাম লাগিয়েছেন এটা আমরা কোনক্রমেই ক্ষমা করতে পারবোনা। গোবিন্দগঞ্জ থেকে লোক উৎসবের কয়েকজন উপেক্ষিত আয়োজক জানান,গিয়াস উদ্দিন সাহেবের পুত্র আনোয়ার হোসেন রনি উৎসব করতে গিয়ে আমাদেরকে উপেক্ষা করেছেন। গিয়াস উদ্দিন সাহেবের ৩ জন স্ত্রী ছিল। এদের একজনের সন্তান ফাহিম এখনও বাসস্ট্যান্ডের ম্যানাজার হিসেবে আছেন। কিন্তু আনোয়ার হোসেন রনি শুধুমাত্র এককভাবে নিজেকে গিয়াস উদ্দিন সাহেবের উত্তরাধিকারী সাজানোর পায়তারায় লিপ্ত আছেন। আমরা শেষ বিয়ার সানাই গ্রন্থটি জব্দ করার দাবী জানাচ্ছি। প্রবাসী গীতিকার নবীন সিদ্দিক তার ফেইসবুক টাইমলাইনের লেখায় উল্লেখ করেছেন গিয়াস উদ্দিন সাহেব সিলেটে এক হোটেলের আড্ডায় আমার ওস্তাদ রমিজ আলী সাহেবের সামনে নিজেকে বাউল কামাল উদ্দিন সাহেবের শীষ্য বলে স্বীকার করেছেন। এবং তিনি এও বলেছেন,গান মারলে তিনি তার ওস্তাদের গান মেরেছেন। অনেকেইতো যেহেতু কামাল উদ্দিন সাহেবের গান অনেকভাবে হজম করেছে শীষ্য হিসেবে তারতো সেই অধিকার আছেই। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে মুঠোফোনে কল করলে দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি হোসাইন মাহমুদ শাহীনকে,কবিপুত্র আনোয়ার হোসেন রনি অসম্ভব উত্তেজিত হয়ে রাগতস্বরে বলেন,কবি গিয়াস উদ্দিন একজন কতবড় মানুষ আপনি তাকে চিনেন। আগে ভাল করে জানেন তারপরে কথা বলেন। আমি আপনাকে কোন কিছু বলতে বাধ্য নই। গতকাল বিশাল প্রোগ্রাম গেছে আমি এগুলো নিয়ে ব্যস্ত আছি। সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বলুন। এদিকে অভিযোগকারী গীতিকার নির্মল কর জনি বলেন,আমি সরকারের কাছে দাবী জানাই,মরমী কবি গিয়াস উদ্দিনের রচিত গানের বইগুলো যেন বাজেয়াপ্ত করা হয়। কারণ কবি হিসেবে যেমন তিনি প্রখ্যাত স্বাধীনতা বিরোধী হিসেবেও তেমনি প্রখ্যাত। কিন্তু বাউল কামাল পাশার গান চুরি করার কোন অধিকার তিনি বা তাদের কারো নেই।

Related Articles

Back to top button
Share via
Copy link
Powered by Social Snap