সারাদেশ

৯ বছরে ৪৮ নারীকে ধর্ষণ করেছে রানা

কলম শক্তি ডেস্ক ঃ তার নাম জসিম উদ্দিন রানা। আলোচিত সিরিয়াল কিলার রসু খাঁর সঙ্গে তার পার্থক্য এতটুকুই যে, রসু খাঁ ধর্ষণের পর হত্যা করত, আর রানা শুধু ধর্ষণ করেছে। ২৩ বছর বয়সী রানার অপকর্মের হাতেখড়ি মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকেই। ৯ বছরে রানার লালসার শিকার হয়েছে কিশোরীসহ বিভিন্ন বয়সী ৪৮ নারী। তবে শেষরক্ষা হয়নি তার। দ্বিতীয় স্ত্রী সুরভী আক্তারকে (১৯) হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার রানা আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তার অপকর্মের কথা স্বীকার করে। রানা বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা করমজাতলা এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে। মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে রানা দ্বিতীয় স্ত্রী সুরভী আক্তারকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এ সময় রানা বিভিন্ন বয়সী ৪৮ নারীকে ধর্ষণের কথাও স্বীকার করে। রানা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রাণ কোম্পানির এসআর হিসেবে চাকরি করত। আদালতে রানার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান। বৃহস্পতিবার রাতে রানা তার দ্বিতীয় স্ত্রী সুরভীকে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার দক্ষিণবাজার এলাকার ভাড়া বাড়িতে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পুলিশ সোমবার রাতে তাকে তার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ১৫ বছর বয়সেই বখে যায় রানা। সে স্কুলজীবন থেকেই বিভিন্ন কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করত। এ কারণে এলাকাছাড়া হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়াত। আর যেখানেই যেত সে এলাকার নারীদের কথার মায়াজালে ফেলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে ধর্ষণ করত। ২০১৬ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নোনদা এলাকার নান্নু মিয়ার মেয়ে নাজনীন বেগম প্রেমের টানে রানার কাছে চলে এলে সে তাকে নকল কাজির মাধ্যমে বিয়ের নাটক সাজিয়ে সংসার শুরু করে। ওই সংসারে পারভীন নামে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। গত বছর তাকে ফেলে পালিয়ে সাভার চলে আসে রানা। সেখানে মোবাইল ফোনে নকল প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করলে মাদারীপুরের সদর উপজেলার চরমুগুরিয়া এলাকার দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে সুরভী আক্তার তার কাছে চলে এলে আবারও নকল কাজি দিয়ে বিয়ে করে সংসার শুরু করে রানা। কিন্তু বিয়ের ব্যাপারটি রানার কয়েকজন প্রেমিকা টের পাওয়ায় সে সাভার থেকে দুই মাস আগে রূপগঞ্জে চলে আসে। এখানে প্রাণ কোম্পানির এসআর পদে চাকরি নিয়ে কাঞ্চন বাজারের মনির মাস্টারের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস শুরু করে। সুরভি নকল বিয়ে ও বহু নারীর সঙ্গে রানার অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি টের পেয়ে তাকে আসল কাবিন করতে চাপ দেয়। এতে রানা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বৃহস্পতিবার রাতের খাবারের পর কোমল পানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট মিশিয়ে সুরভীকে পান করিয়ে অচেতন করে। এরপর শ্বাসরোধে হত্যা করে বাইরে থেকে ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়। সুরভীর মৃত্যুর খবর শ্বশুর দেলোয়ার হোসেনকে মোবাইল ফোনে জানায় সে। এ ঘটনায় সুরভীর বাবা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় তার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

Related Articles

Back to top button
Share via
Copy link
Powered by Social Snap