ধান কাটার শ্রমিক সংকটে ওসি মোস্তফা কামালের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

কলম শক্তি ডেস্ক ঃ করোনা মহামারী পাল্টে দিচ্ছে পৃথিবীকে। ঘরকুনো ছেলেটাও মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে গোপনে অসহায়ের বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছে খাবারের প্যাকেট। যারা এক সময় পুলিশের নামে নাক সিটকাতেন, তাদের ঘরেও আর পুলিশের হাত ধরে পৌঁছে যাচ্ছে খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট। বদলে যাওয়া সময়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে মানবিক হিসেবে নিজেদের মেলে ধরেছে পুলিশ। দিনভর করোনার প্রকোপ কমাতে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত আর রাতে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অপরাধীদের পিছু ধাওয়ার মধ্যেই এখন সীমাবদ্ধ নেই পুলিশের কার্যক্রম। নিজেরাই খাবারের প্যাকেট মাথায় করে চুপিসারে অসহায়ের বাড়িতে পৌঁছেই দায়িত্ব শেষ করছে না তারা। আগামীতে যাতে খাদ্য সংকট না হয়, তার জন্য সময়মতো বোরো ধান কাটার ব্যবস্থা করতেও উদ্যোগী পুলিশ। করোনা আতঙ্কে সারা দেশেই ধান কাটার শ্রমিকের সংকট। শিল্প নগরী ছাতকও তার ব্যতিক্রম নয়। এবার কৃষকদের ধান কাটার শ্রমিক সংকট কাটাতে ব্যতিক্রমী উদ্যেগ নিয়েছেন ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামাল। আগাম কালবৈশাখী কিংবা অতিবৃষ্টির দাপট থেকে বোরো ফসল রক্ষায় মাঠে নেমেছেন তিনি। করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া মিল কারখানার শ্রমিক কিংবা অন্যপেশার শ্রমিকদের ধান কাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে উদ্ভুদ্ধ করছেন। হাওড়ে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে পাকা বোরো ধান কাটার কাজে শ্রমিকদের সাথে নিজেও কাস্তে হাতে নেমে পড়ছেন। তার এই উদ্যেগে করোনার কারণে বেকার হয়ে যাওয়া শ্রমিকরা যেমন বিকল্প কাজ খুঁজে পেয়েছেন, তেমনি উৎসাহিত হচ্ছেন। ধান কাটার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা পুলিশের পাশাপাশি ধান কাটছেন। হাওড়পারের কৃষকরা জানান, করোনার কারণে ধান কাটার শ্রমিক সংকট। আর এ সংকট কাটাতে উদ্যেগ নিয়েছেন ছাতক থানার ওসি। তিনি বেকার হয়ে যাওয়া মিল কারখানার শ্রমিকদের ধান কাটার শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগিয়ে উপকার করেছেন। আশা করি সময়মতো ধান কেটে তুলতে পারবো। ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামাল বলেন, সময়মতো ধান কাটতে না পারলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই করোনার সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি ধান কাটার বিকল্প শ্রমিক যোগাড় করেছি। এতে করে বেকার হয়ে যাওয়া শ্রমিকদেরও একটা কর্মসংস্থান হলো। তিনি বলেন, এবার ছাতকে ১৪ হাজার ৬২২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৯ হাজার ৭শ মেট্রিকটন চাল। তিনি বলেন, করোনার কারণে বিভিন্ন অঞ্চলের ধান কাটার শ্রমিকরা আসতে না পারায় বিকল্প শ্রমিকের ব্যবস্থা করেছি। এতে করে দ্রুত কৃষকরা তাদের ফসল গোলায় তুলতে পারবেন। বিকল্প শ্রমিকদের বুঝিয়ে, তাদের ধান কাটায় উদ্ভুদ্ধ করেছি। বিষয়টি সার্বক্ষনিকভাবে আমি নিজেই মনিটরিং করছি।
সংগৃহিত ঃ সিলেট পোস্ট