আন্তর্জাতিক

করোনা যুদ্ধের সৈনিক দিরাইয়ের শতবর্ষী দবিরুল ইসলাম চৌধুরী, বিশ্বজুড়ে আলোচনায়

নিউজ ডেস্ক ঃ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী শতবর্ষী দবিরুল ইসলাম চৌধুরী। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ নাগরিকের বয়স ১০০ বছর। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য দাতব্য সহায়তার অংশ হিসেবে অর্থ উত্তোলন করছেন তিনি। আর এ জন্য দবিরুল তাঁর বাড়ির বাগানে হাঁটছেন। এখান থেকে সংগৃহীত অর্থ যুক্তরাজ্য, বাংলাদেশসহ প্রায় ৫০টি দেশের করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ব্যয় করা হবে। এই বয়সে তাঁর এই উদ্যোগ পৃথিবীজুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিবিসি, আলজাজিরা, গার্ডিয়ানসহ বিশ্বের নামীদামী সব গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দবিরুল ইসলাম চৌধুরীর এই উদ্যোগ নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখেই বাগানে ১০০ কদম করে হাঁটার ব্রত নিয়েছেন দবিরুল ইসলাম চৌধুরী। বাগানটি প্রায় ৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের। গত ২৬ এপ্রিল থেকে এই কাজ শুরু করেন তিনি। তাঁর লক্ষ্য ছিল মাত্র এক হাজার পাউন্ড তোলা। কিন্তু মোটে কয়েক ঘণ্টাতেই তা উঠে যায়। বর্তমানে দবিরুল ইসলামের ওই উদ্যোগে উঠেছে ৭৫ হাজার পাউন্ডের বেশি অর্থ। জাস্টগিভিং ডটকমে পেজ খুলে অর্থ উত্তোলনের এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন দবিরুল ইসলাম চৌধুরী। একটি ব্রিটিশ-বাংলাদেশি টেলিভিশন ব্রডকাস্টার চ্যানেল, চ্যানেল এস চালাচ্ছে রমাদান ফ্যামিল কমিটমেন্ট (আরএফসি) কার্যক্রম, এটি মূলত কোভিড-১৯ সংকটের কারণেই চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগের জন্য অর্থ তুলতেই বাগানে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দবিরুল। গার্ডিয়ান বলছে, শুধু এক হাজার পাউন্ড তোলার লক্ষ্য থাকলেও, মানুষের অভাবিত সাড়ায় উৎসাহিত হয়েছেন দবিরুল। রমজান মাসজুড়েই বাগানে হেঁটে হেঁটে তহবিল সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যেতে চান শতবর্ষী এই ব্যক্তি। ১৯২০ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাদেশের সিলেটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন দবিরুল ইসলাম চৌধুরী। ১৯৫৭ সালে তিনি লন্ডনে চলে গিয়েছিলেন। ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে পড়াশোনার জন্য তিনি যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন। এরপর থেকে তিনি যুক্তরাজ্যেই বসবাস করে আসছেন। দবিরুল ইসলাম চৌধুরী। ছবি ফেসবুক থেকেদবিরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে আতিক চৌধুরী বিবিসিকে বলেছেন, শুরুতে খুবই ধীরগতিতে হাঁটা শুরু করেছিলেন তাঁর বাবা। পরে আস্তে আস্তে তিনি হাঁটার গতি বাড়িয়েছেন। সমস্যা হলো, এরপর‌ তিনি থামতেই চাচ্ছিলেন না। জাস্টগিভিং পেজ-এ লেখা আছে, দবিরুল ইসলাম চৌধুরী থাকেন সেইন্ট আলবানসে। একসময় সেখানকার কমিউনিটি নেতা ছিলেন তিনি। স্থানীয় কমিউনিটির বিভিন্ন প্রকল্প সম্পাদনের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের সময় দেশের জন্যও তিনি অর্থ উত্তোলন করেছিলেন। এ ছাড়া দবিরুল একজন বইপ্রেমী। স্থানীয় বুক ক্লাবগুলোয় তিনি নিয়মিত সময় কাটাতে ভালোবাসেন। জাস্টগিভিং পেজে লেখা আছে, দবিরুল একজন কবি এবং তাঁর অনেক কবিতা এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।

Related Articles

Back to top button
Share via
Copy link
Powered by Social Snap