দিরাইয়ে ভাংচুর, গুলিবিদ্ধের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর সুড়িয়ারপাড় গ্রামে সাবেক ইউপি সদস্য আবুবকর সাগরের বাড়িতে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই হামলায় আবুবকর সাগরের ৪ স্বজন গুলিবিদ্ধ হন। তারা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
শুক্রবার রাতে আবুবকর সাগর বাদী হয়ে উত্তর সুড়িয়ারপাড় গ্রামের আব্দুল মালিক ওরফে মালেক, আঙ্গুর মিয়া, রুহেল মিয়া সহ মোট ১২ জনের নাম উল্লেখ করে দিরাই থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় এজাহার নামীয় আসামী মিটু মিয়াকে গ্রেফতার করে সুনামগঞ্জ জেলহাজতে প্রেরণ করেছে দিরাই থানা পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুড়িয়ারপাড় গ্রামের আঙ্গুর মিয়া, আব্দুল মালিক ওরফে মালেক, রুহেল মিয়া ও তাদের বাহিনী অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে সাবেক ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুবকর সাগরের বাড়িঘরে ব্যাপক ভাংচুর ও গুলি বর্ষণ করে। এসময় আবুবকরের ৪ স্বজন গুলিবিদ্ধ হয়।
মামলার বাদী আবুবকর সাগর বলেন, ৭৪ সালে ওরা আমার বাবাকে খুন করেছে। ৯৫ সালে আমার চাচাতো ভাই নুরুল হককে খুন করেছে। ২০১৬ সালে আমি স্থানীয় আকিলশাহ বাজার থেকে ফেরার পথে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত মনে করে ফেলে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করলে আল্লাহর দয়ায় আমি বেঁচে যাই। এরপর থেকে দফায় দফায় হত্যার উদ্দেশ্যে আমাকে হামলা অব্যাহত রাখলে আমি পরিবার নিয়ে বাড়িঘর ফেলে পালিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। তারা আমার বাড়ি, ফসলি জমি কয়েকবছর জোরপূর্বক ভোগ করেছে। আমাদের গবাদিপশু নিয়ে গেছে। বিগত মাসখানেক পুর্বে আমার মা মারা গেলে কয়েকবছর পর মায়ের লাশ নিয়ে গ্রামে যাই। দাফনের সপ্তাহখানেক পরে নিরাপত্তাজনিত কারণে আবার বাড়ি থেকে সুনামগঞ্জ চলে আসি । গত বুধবার আমার মায়ের চল্লিশা শিরণি করার জন্য আবার গ্রামে যাই। আমার বোনেরা ও আত্মীয়-স্বজন শিরনি উপলক্ষে বাড়িতে ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ডাকাত মালেক, আঙ্গুর মিয়া ও রুহেল মিয়ার নেতৃত্বে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার বসত বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। তারা গুলিবর্ষণ করলে আমার আত্মীয়রা গুলিবিদ্ধ হয়। আমার বাড়িঘর ব্যাপক ভাংচুর করে তারা। আমি পালিয়ে গ্রামের সুফি মিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে প্রাণ বাঁচাই। আমি প্রশাসনের কাছে ভবিষ্যতের জন্য আমার প্রাণের নিরাপত্তা চাই।
দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ আজিজুর রহমান বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত আছে।