বিশেষ কলাম

বাবাদের ত্যাগ অধরাই থেকে যায়

হিল্লোল পুরকায়স্থ ঃ সকালে যখন ঘুম ভাঙ্গল মোবাইলটা হাতে নিয়ে ফেসবুক লগিং করতেই বুঝতে পারলাম আজ জুন মাসের তৃতীয় রোববার, বিশ্ব বাবা দিবস। এই দিনটা বিশ্বের প্রায় ৭৪টি দেশে বাবা দিবস হিসেবে পালিত হয়। তাই বাবা দিবসে সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই বাবাদের ত্যাগ সবসময় অধরা থেকে যায়।বাবারা সন্তানের জন্য কিনা করেন। বাবা যখন প্রথম সন্তানের মুখ দেখেন তখন থেকেই তার জীবনে নতুন মূর নেয়। ৃএকজন বাবা তার সন্তানের জন্য কতভাবে অবদান রেখে যান তার চুলচেড়া হিসাব কেউ কোনদিন বের করতে পারবে না। তেমনি একটা ঘটনা আজ থেকে বেশ আগে আমি তখন এফআইভিডিবি তে চাকরি করি। চাকরির সুবাদে শিশুদের অভিভাবকদের চাইল্ড ডেভালপমেন্ট প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলাম। ঘরির কাটায় যখন ১১ টা হল তখন চা,নাস্তার বিরতি দেওয়া হল। সবাই নাস্তা করে ফিরে এল তখন হঠাৎ এক মুরুব্বির পকেট একটু ফুলে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলাম আপনার পকেটে কি।তিনি পরক্ষণে পকেট থেকে একটা আপেল বের করে দেখালেন। বুঝতে আর দেরি নেই উনি উনার সন্তানের জন্য নিজে না খেয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তারপর উনার সাথে কথা বলে এটাও জানতে পারি উনি উনার বাড়ী থেকে সকালে কিছু না খেয়ে প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিলেন। এঘটনা থেকে হয়ত বাবাদের ত্যাগের তেমন কিছুই ফুটেউঠে না। আমাদের ধর্মে পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম, পিতাহী পরমং তপঃ, পিতরী প্রিতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্বদেবতা’- এই মন্ত্র জপে বাবাকে স্বর্গজ্ঞান করে শ্রদ্ধা করেন। আজ আমার বাবা পৃথিবীতে বেঁচে নেই যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে হয়ত করোনা পরিস্থিতিতে বাবা আমার নিরাপত্তা নিয়ে তিনিই বেশি চিন্তিত থাকতেন। চাকরির দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রতিদিনি গণপরিবহনে যাতায়াত করতে হয়।বাবা বেঁচে থাকলে হয়ত বারবার সচেতন করে দিতেন, বলতেন এটা করনা,ওটা করনা। এভাবে চল,স্বাস্থ্যবিধি মেনে চল,বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুতে মনে করিয়ে দিতেন। আসলে সত্যিকার অর্থে বাবাদের অবদান আর সন্তানের জন্য ত্যাগ লিখে বুঝানো যাবেনা। আমরা সময়ে দেখতে পাইনা বাবাদের রাগ,আর শাসনের আরালে লুকিয়ে থাকা সন্তানের জন্য বাবাদের তিলে তিলে নিজেকে নিঃশেষ করে দেওয়ার দৃশ্য। আর যখন বুঝতে পারি তখন হয়ত শত চেষ্ঠা করেও ঐ দূর দেশ থেকে বাবাকে আর ফিরাতে পারিনা।

Related Articles

Back to top button
Share via
Copy link
Powered by Social Snap