দিরাইয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় হাওরে ধান কাটার ধুম, এগিয়ে এসেছে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

দিরাই প্রতিনিধি; সুনামগঞ্জের দিরাই হাওরাঞ্চলে উদ্বেগ উৎকন্ঠার মধ্যেও ধানকাটার ধুম পড়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দুই সপ্তাহে সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাতসহ আগাম বন্যার আশংকা থাকায় কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার প্রধানের এ আহবানকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মশিউর রহমান, সুনামগঞ্জের জেলাপ্রশাসক আবদুল আহাদ, ইউএনও সফি উল্লাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগন বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করেন এবং হাওরে ধানকাটায় সকলের অংশ্রগ্রহন নিশ্চিতের লক্ষ্যে আহবান জানান। এ আহবানের সাড়া দিয়ে মাঠে নামতে দেখা গেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজনকে। গতকাল মঙ্গলবার হাওরে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় হাওরে হাওরে ধানকাটার ধুম পড়েছে। করোনা সংকটে কর্মহীন হয়ে পড়া অনেক লোকজন হাওরে ধানকাটাকেই শ্রম হিসেবে বেচে নিয়েছেন। উপজেলার ভরাম হাওরে জমির পাকা ধান নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় ছিলেন দরিদ্র বর্গাচাষী সাবজাল মিয়া ও মহেশ রায়। এমনি সময়ে তাদের পাশে দাঁড়াল ভাটিবাংলা সঞ্চয় ও ঋনদান সমবায় সমিতি লিমিটেডের সমবায়ীবৃন্দ। সাবজাল মিয়ার আড়াই কেয়ার ও মহেশ রায়ের আধা কেয়ার জমির ধান স্বেচ্ছাশ্রমে কেটে দিলেন সমিতির ২৫ জন সদস্য। এ সময় ধান কাটায় অংশ নেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রাজমনি সিংহ, দিরাই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান লিটন, ভাটিবাংলা সঞ্চয় ও ঋনদান সমবায় সমিতির সভাপতি প্রশান্ত সাগর দাস,ব্যবসায়ীদের মধ্যে সুর্যকান্ত রায়, অপু মোদক,শিক্ষার্থী রঞ্জু সুত্রধরসহ সমবায়ীবৃন্দ। কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা নয়টি বৃহৎ হাওরে ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি বেরো ধান চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৭০ ভাগ ধান পেকে গেছে, কাটা হয়েছে ১৫ ভাগ ধান। শ্রমিক সংকটের কথা স্বীকার করে উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, প্রতিকুল আবহাওয়ার পুর্বাভাসে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ধান কাটা শেষ করার আহবান রয়েছে, আমরা আশাবাদি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সকল শ্রেনী পেশার লোকজন ধান কাটায় এগিয়ে আসলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শতভাগ ফসল গড়ে তোলা সম্ভব। উপজেলা সমবায় কর্তা রাজমনি সিংহ বলেন, শ্রমিক সংকটের দুর্যোগে ভাটিবাংলা সঞ্চয় ও ঋনদান্ সমবায় সমিতির সদস্যবৃন্দের এগিয়ে আসাকে স্বাগত জানাতে তাদেও সাথে ধান কাটতে এসেছি, সমিতির সমবায়ীরা বিগত ৫ দিন যাবৎ স্বেচ্ছাশ্রমে নিরুপায় কৃষকদের ধান কেটে দিচ্ছেন। কৃষক সাবজাল মিযা ও মহেশ রায় জানান, করোনা মহামারী ও জমির পাকা ধান নিয়ে শ্রমিক সংকটে বড় দুশ্চিন্তায় ছিলাম, সমিতির ভাইয়েরা আমাদের জমির ধান কেটে দেয়ায় চিন্তামুক্ত হলাম, এভাবে সবাই এগিয়ে আসলে কৃষকদের কোন সংকট থাকবেনা।