সারাদেশসাহিত্য

কাজের ধরণ যেখানে ধনী-গরীবের মানদণ্ড

একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকের দৈনিক আয় গড়ে এক হাজার টাকা। আর দোকানে কাজ করা আরেকজন লোকের দৈনিক আয় গড়ে ৩০০টাকা। অটোরিকশা চালক নিম্নবিত্ত কিন্তু দোকানে কাজ করা লোকটি মধ্যবিত্ত। আবার রিকশা চালকের দৈনিক আয় ৫০০-৮০০ টাকা। আরেকজন রেমিট্যান্সের উপর নির্ভরশীল বেকার ছেলের দৈনিক আয় শূন্য পয়সা। রিকশা চালক নিম্নবিত্ত কিন্তু বেকার ছেলেটা মধ্যবিত্ত। আমাদের সমাজে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তের মধ্যে পার্থক্য নির্ভর করে কাজের ধরণের উপর। কে কতো টাকা আয় করলো সেটা নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। ত্রাণ বিতরণের সময় এই ব্যাপার খুব বেশী লক্ষ্য করা যায়। আমরা যাদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে গরীবদের ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে থাকি তাদের অনেকের থেকে সেই গরীব লোকের দৈনিক আয় বেশি। এই সমাজে কাজের শ্রেণির উপর নির্ভর করে ধনী-গরিব নির্ধারণ করা হয়। একজন চা বিক্রেতা যে দৈনিক এক হাজার কাপ চা বিক্রি করে তাকেও চাকরি করা ছেলেটা গরীব মনে করে। আসলে গরীব কে? যে চা বিক্রি করে মাসে ৩০ হাজার টাকা রোজগার করে সে নাকি যে চাকরি করে করে ১৫ হাজার টাকা বেতন পেয়ে খুব ভালো কাপড়চোপড় পড়ে চলা ফেরা করে সে। করোনা ভাইরাসের জন্য যেদিন থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হলো তখন আমরা রাস্তায় রাস্তায় রিকশা চালকদের ত্রাণ দিয়েছি। কিন্তু যেই ছেলেটা ত্রাণ বিতরণ করছে তার থেকে রিকশা চালকের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক ভালো। রিকশা চালকেরা স্বভাবগত গরীব। আর আমরা হলাম স্বভাবগত ধনী। সে সহজেই হাত পাততে পারে আমরা পারি না। এই সমাজে কাজের শ্রেণির উপর নির্ভর করে ধনী-গরিব নির্ধারণ করা হয়। একজন চা বিক্রেতা যে দৈনিক এক হাজার কাপ চা বিক্রি করে তাকেও চাকরি করা ছেলেটা গরীব মনে করে। আসলে গরীব কে? যে চা বিক্রি করে মাসে ৩০ হাজার টাকা রোজগার করে সে নাকি যে চাকরি করে করে ১৫ হাজার টাকা বেতন পেয়ে খুব ভালো কাপড়চোপড় পড়ে চলা ফেরা করে সে। অর্থনীতি আমি তেমন বুঝি না। কিন্তু সমাজে চলতে গিয়ে দেখেছি মানুষ কতটা মিথ্যে অহংকারী। কাজের শ্রেণি বিভাগ করে আমরা কোন কাজকে করেছি ছোট আবার কোন কাজকে করেছি বড়। আর এই কাজের উপর নির্ভর করেই আমরা ঠিক করি কে নিম্নবিত্ত, কে মধ্যবিত্ত আর কে উচ্চবিত্ত। কিন্তু কার দৈনিক আয় কতো সেটা দেখি না।

ফাহাদ মোহাম্মদ। প্রাবন্ধিক

Related Articles

Back to top button
Share via
Copy link
Powered by Social Snap