শাল্লায় উপবৃত্তির ফরম পূরণে টাকা নেয়ার অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক ঃ শাল্লা উপজেলার প্রাচীন গিরিধর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ফরম পূরণে ৩শ’ টাকার নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি গিরিধর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ১৬৭ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের কাছ থেকে রশিদ ছাড়াই উপবৃত্তির আবেদন ফরম পূরণে ৩শ’ টাকা নেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। যারা টাকা দিতে অক্ষম হয়েছেন তাদের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। এ নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য হবিবপুর গ্রামের নিতিশ পুরকাস্থ বলেন, টাকা নেয়ার বিষয়টি সত্য। কিন্তু রশিদ ছাড়া কেন টাকা নেয়া হল সেটি তিনি অবগত নন বলে জানান। তিনি বলেন, বেতনের টাকা নেয়ার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। তবে সেই টাকা রশিদ মারফত নেয়ার কথা। কেন রশিদ ছাড়া ছাত্র ছাত্রীর কাছ থেকে ৩শ’ টাকা নেয়া হলো সে বিষয়ে আগামী সভায় আলোচনা করবো। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির আরেক সদস্য অজয় রায় বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। উপবৃত্তির আবেদন করার সময় কেন টাকা নেওয়া হল সেটি আমার জানা নাই। রশিদ ছাড়া টাকা নেওয়ায় আমি নিজেই লজ্জিত। আমার নিকট অনেক অসচ্ছল অভিভাবক জানিয়েছেন, টাকা দিতে পারেননি বলে তাদের সন্তানের উপবৃত্তির আবেদন রাখা হয়নি। আনন্দপুর গ্রামের বিকাশ চক্রবর্ত্তী বলেন, বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ডের দিকে লক্ষ্য করলে বুঝা যায় প্রতিষ্ঠানের অবস্থা নাজুক। কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা মাফিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি আবেদন গ্রহণ করার সময় উপবৃত্তি পাইয়ে দেয়ার নামে জনপ্রতি রশিদ ছাড়া ৩শ’ করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হল। তিনি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। শিক্ষার্থী অভিভাবক আনন্দপুর গ্রামের শিল্পী রানী বলেন, আমি খুব কষ্ট করে সন্তানদের পাড়ালেখা চালিয়েছি। উপবৃত্তির কথা শুনে আমি নিজে ইস্কুলে গিয়ে কেরানী রতন দাসের কাছ থেকে আবেদন ফরম এনেছি। পরদিন পরম জমা দিতে গেলে তিনি আমাকে ৩শ’ টাকা দিতে বলেন। আমি টাকা দিতে অক্ষম হওয়ায় আমার আবেদন রাখেননি তিনি। পল্লী চিকিৎসক রবীন্দ্র সরকার (মন্টু) বলেন, প্রধান শিক্ষক আনন্দ মোহন দাস এক জন দায়িত্বহীন ব্যক্তি। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ৩শ’ করে টাকা নেওয়া হয়েছে। উপবৃত্তি পাইয়ে দেয়ার নামে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক আনন্দ মোহন দাস রশিদ ছাড়া টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বেতনের টাকা নেওয়া হয়েছে। রশিদ ব্যতিত টাকা নেয়ার বিধান আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রশিদ পরে দেওয়া হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমান কিরন ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন বলেন, উপবৃত্তির আবেদন ফরস পূরণের নামে রশিদ ব্যতিত টাকা নেয়া আইন পরিপন্থী। সরকার পরিচালিত যে কোন প্রতিষ্ঠানে রশিদ ব্যতিত অর্থ লেনদেন করা অপরাধমূলক কাজ। গিরিধর উচ্চ বিদ্যালয়ে যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্র- দৈনিক সুনামগঞ্জের খবর