দিরাইয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আটক ১০
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে নুর মোহাম্মদ (৫৭) নামে এক ব্যক্তি নিহত ও অন্তত: ২০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বেলা ১০ টায় উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের মধুরাপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে। নিহত নুর মোহাম্মদ পেশায় মাছ ব্যবসায়ী। তিনি ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মৃত আ. লতিফের পুত্র।
এঘটনায় আহতরা হলেন, কামালপুর গ্রামের শফিক মিয়া (৩৪), রেজু মিয়া (১৯), ফারুক আহমেদ (৫০), হিরন মিয়া (২৮), জাকারিয়া (২৫), জহুরা বেগম (৪০), মামুন, সোহেল, গফফার। বাকি আহতদের নাম তাৎক্ষনিকভাবে জানা যায়নি।
ঘটনার পর স্থানীয়রা আহতদের দিরাই সরকারি হাসপাতালে নিয়ে এলে গুরুতর আহত শফিক মিয়া, রেজু মিয়া ও ফারুক আহমেদ কে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সংবাদ পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানাযায়, মধুরাপুর ও কামালপুর গ্রামে দুটি পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পুরোনো বিরোধ চলে আসছে। যার সূত্রপাত ঘটে ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান লিটন চৌধুরীর স্ত্রী ও লিটন চৌধুরীর ভাই সাবেক চেয়ারম্যান জাহেদ চৌধুরীর সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্ধকে ঘিরে। এর একপক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছে মধুরাপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মুকিত চৌধুরী ও অপর পক্ষে আমেরিকা প্রবাসী সাবেক চেয়ারম্যান জাহেদ চৌধুরী। দুজনে সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতে ভাই। মুকিত চৌধুরীর হয়ে এলাকায় নেতৃত্ব দিচ্ছে কামালপুর গ্রামের নুরজালাল ও জাহেদ চৌধুরীর পক্ষে মধুরাপুর গ্রামের দিল হক। দুই প্রবাসীর আধিপত্য ধরে রাখতে গ্রামে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটে আসছে। গ্রামের নিয়ন্ত্রণে থাকা কয়েকটি জলমহাল থেকে প্রতিবছর কয়েক লক্ষ টাকা আয় হয়। গ্রামের ফান্ডের এই টাকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে দুপক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। বিগত এক মাসের মধ্যে কয়েকবার হামলা পাল্টা হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে থাকায় গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।
এরই জের ধরে আজ (মঙ্গলবার) সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষ একে অন্যের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় প্রতিপক্ষের হামলায় ঘটনাস্থলেই খুন হন মুকিত চৌধুরী পক্ষের নুর মোহাম্মদ।
ভাটিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান কাজী জানান, মধুরাপুর ও কামালপুর গ্রামের বিবদমান দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম ১ জন নিহতের বিষয় নিশ্চিত করে জানান, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে, গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।