
মোশাহিদ আহমদ : সুনামগঞ্জের দিরাই পৌর শহর। কদিন আগের ব্যস্ত কর্মচঞ্চল শহরটিতে যেন রীতিমতো ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। চোখে দেখলে মনে হয় এ যেন এক অন্য দিরাই। এঅবস্থাকে অঘোষিত লকডাউন হিসেবে অভিহিত করেছেন অনেকেই। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে ওষুধ ও নিত্যপণ্যের দোকান ব্যতিত রেস্টুরেন্ট, সেলুনসহ সবধরণের দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি বেসরকারি দপ্তর, সকল গণপরিবহন, মার্কেট সবকিছু বন্ধ আছে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনায়। শুরুর দিকে প্রশাসনের নির্দেশনা সাধারণ মানুষ অতোটা গুরুত্ব না দিলেও বর্তমানে পরিস্থিতি ভিন্ন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি আরোপ ও শুক্রবার সকাল থেকে সেনা টহল শুরু হওয়ায় বদলে গেছে চিত্রপট। ফাঁকা হয়ে গেছে রাস্তাঘাট। সন্ধ্যার পর সবধরণের দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকায় নেমে আসে সুনশান নীরবতা। রীতিমতো ভুতুড়ে শহরে পরিণত হয় দিরাই। এছাড়া মানুষজন নিজ সচেতনতায়ও এখন আর ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। করোনা প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা মেনে সহযোগিতা করবেন বলে জানান স্থানীয়রা।

তবে এঅবস্থায় বিপত্তি দেখা দিয়েছে শ্রমিক, দিনমজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবনধারণে। ‘দিন আনে দিন খায়’ লোকজন রয়েছেন চরম সংকটে। পত্রিকা হকার ঝন্টু মিয়া বলেন, সংবাদপত্র আসা বন্ধ রয়েছে, এঅবস্থা চলতে থাকলে পেট চলবে কি করে। রিকশা চালক সুরুজ আলী বলেন, পেটতো ভাইরাস বুঝে না, তাই রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু কোন যাত্রী নেই। ৬ ঘন্টা বাজারে আছি ৭০ টাকা রোজগার হইছে। ক্ষুদ্র চা দোকানি রুপক দাস বলেন, ৩ দিন ধরে দোকান বন্ধ, এভাবে চললে পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরবো।
দিনমজুর শ্রমিকদের জন্য সরকারের বিশেষ সহায়তা শীঘ্রই উপজেলাজুড়ে বন্টন শুরু হবে জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সফি উল্লা বলেন, এই পরিস্থিতিতে যাতে কেউ না খেয়ে থাকে না সেজন্য সরকার বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছেন। নিজের পরিবার, দেশ সর্বোপরি নিজের স্বার্থেই এখন প্রত্যেককে ঘরে থাকতে হবে। তিনি বলেন, হাট বাজরে লোকজন না থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও সেনাবহিনীর সহায়তায় করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামুলক প্রচারণা অব্যাহত আছে। লকডাউন নয়, মানুষের সুরক্ষার জন্য চলাচল সীমিত করা হয়েছে।
