দিরাই পৌরসভার মজলিশপুরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন
হিল্লোল পুরকায়স্থ, দিরাই :: সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরসভার মজলিশপুর গ্রামের সরকারি পুকুরপাড় সংলগ্ন রোডে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। খুঁটি ভেঙ্গে পরায় সঞ্চালন লাইন বিপদজনকভাবে নীচু অবস্থায় ঝুলে আছে। স্থানীয়রা জানায়, চার বছর আগে বৈদ্যুতিক পাকা খুঁটি স্থাপন হলেও এখনও সেই খুঁটিতে সঞ্চালন লাইন স্থানান্তর হয়নি। দেড় যুগ আগে স্টীলের সরু খুঁটিতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন চালু হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত কিছু খুঁটি মরিচা ধরে সম্পুর্ন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিকল্প হিসেবে বাঁশের খুটি ব্যবহার করা হয়। বাকি খুটিগুলোও মরিচায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কিছু খুঁটি হেলে আছে। এতে করে সঞ্চালন লাইন হাতের নাগালে ঝুলে থাকায় দেখা দিয়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। কোন-কোন স্থানে রাস্তা হতে ঝুলন্ত বৈদ্যুতিক ক্যাবল ৫- ৬ ফুট উচ্চতায় এসে পড়েছে। এছাড়া রাতের আঁধারে চলাচলে যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
সরেজমিন দেখা যায়, মজলিশপুর গ্রামের সরকারি পুকুর পাড় পয়েন্ট সংলগ্ন প্রায় অর্ধ – কিলোমিটার জায়গায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা সনাতন ও দীর্ঘদিনের পুরনো। পুরনো স্টীলের খুঁটিতে লাইন থাকায় অনেক জায়গায় ঝুঁলে পরেছে। আবার কিছু জায়গায় স্টীলের খুঁটি না থাকায় বাঁশের খুঁটিতে বৈদ্যুতিক ক্যাবল ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে। ক্যাবল ঝুঁলে পরায় স্থানীয়রা রশি তার দিয়ে বেঁধে রেখেছেন গাছের সাথে।
স্থানীয় লোক আবুল কালাম আজাদ জানান, একদিকে বৈদ্যুতিক তারের এই অবস্থা, অন্যদিকে গ্রামের কয়েকশ পরিবারের জন্য একটি ট্রান্সফরমার। লো-ভোল্টেজের ভোগান্তি অনেক বছর ধরে। মাসখানেক আগে মিশন রোড হতে সরকারি পুকুরপাড় ঘেঁষে লামা রোডে নতুন লাইন টানা হয়েছে। সরকারি পুকুরপাড়ে ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে অথচ এই লাইনে আমাদের লাইনের সংযোগ দেওয়া হয়নি। আমরা বছরখানেক আগে এমপি মহোদয়ের সুপারিশ নিয়ে বাকি জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনসহ নতুন লাইনের জন্য উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করেছিলাম কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোন অগ্রগতি দেখছিনা।
এ অবস্থায় গ্রামের লোকজন পাকা খুঁটিতে সঞ্চালন লাইন স্থানান্তর ও লো-ভোল্টেজের সমস্যা নিরসনে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে দাবী জানিয়েছেন।
দিরাই আবাসিক বিদ্যুৎ প্রকৌশলী মোহাম্মদ হায়দার আলী জানান, কাটা ছেঁড়া, স্টীল ও বাঁশের খুঁটির সঞ্চালন লাইন নির্দিষ্ট পুলে স্থানান্তরে একটি প্রকল্পের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারছেন না। আশা করছি ১৫/২০ দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। চার বছর ধরে খুঁটিতে সঞ্চালন লাইন স্থানান্তর না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দিরাই এসেছি নয় মাস, কি কারণে ওই কাজ বন্ধ হয়েছিল, সেটা জেনে বলতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ খাতে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করেছে। মনে করুন, এই দিরাইয়ে একসময় ঘন্টার পর ঘন্টা টানা লোডশেডিং হতো। মানুষ অপেক্ষায় থাকতো কখন বিদ্যুৎ আসবে। পাড়া মহল্লা, বাজারে মুখেমুখে একই আলোচনা বিদ্যুতের কি হলো, কি হলো? এখন দিন বদলেছে, এককালে মানুষের প্রধান আলোচনার বিষয় বিদ্যুত নিয়ে কেউ আর এখন কথা বলেন না। আমরা ধীরে ধীরে উন্নতি করছি, বিদ্যমান সমস্যাগুলোও থাকবে না। বিদ্যুৎ খাতকে আরও এগিয়ে নিতে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল ও বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য সকল গ্রাহকদের অনুরোধ করেন তিনি।