দিরাইয়ে দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ে ছাই কৃষকের সম্বল
মোশাহিদ আহমদ :: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে রাতের আধাঁরে দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে দরিদ্র কৃষক মো. মঞ্জুর খানের একমাত্র সম্বল ৩ টি গাভী গরু, ৪ টি ভেড়া ও ৯০ মন ধান। এতে ওই কৃষকের ৪ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। সোমবার ভোর রাতে উপজেলার জগদল ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। শিশুকন্যাকে প্রশ্রাব করানোর জন্য মঞ্জুর খানের স্ত্রী ঘরের বাইরে বের হয়ে প্রথমে আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পান। স্বামীসহ পরিবারের লোকদের ঘুম থেকে ডেকে তুলেন। প্রতিবেশেীদের সহযোগিতায় ঘন্টাব্যাপী চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এরই মধ্যে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় গবাদিপশু, ধান ও টিনসেড ঘরটি। বিষয়টি নিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে দিরাই থানা পুলিশ।
কৃষক মো. মঞ্জুর খান জানান, অন্যের জমি বর্গা চাষ করে সংসার চলে তার। স্ত্রী, ২ ছেলে ও ৪ মেয়ের সংসারে তিনি একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। বসত বাড়ি ও গবাদিপশুগুলোই তার একমাত্র সম্বল। পুড়ে যাওয়া ধানগুলো রেখেছিলেন পরিবারের লোকদের আহার ও চলতি বোরো মৌসুমে চাষাবাদের কাজের ব্যয় নির্বাহ করতে। বুক চাপড়ে কেঁদে কেঁদে কৃষক মঞ্জুর খান বলেন, আমার পুড়ে যাওয়া ঘরটি গোয়াল ঘর ও ধান রাখার গোলা ঘর হিসেবে ব্যবহার করতাম। ঘরে কারেন্টের লাইন ছিল না, কেউ রাতে ঘুমাতোও না। নিশ্চই কেউ আগুন লাগিয়ে আমার সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। মঞ্জুর খান আরও বলেন, তিনটি গরুই গর্ভবতী। একেকটা গরু ৬০/৭০ হাজার টাকা মুল্যের ছিল। আগুনে গরু, ভেড়া, ধান ও ঘর পুড়ে তার প্রায় ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
দৌলতপুর গ্রামের খান ছালিম বলেন, কৃষক মঞ্জুর খান একজন দরিদ্র বর্গা চাষী। গবাদিপশু ও ধানগুলোই তার সম্বল ছিল। আগুনে তিনি নিঃস্ব হয়ে গেলেন। খান ছালিম বলেন, পুড়ে যাওয়া ওই ঘরটিতে কোন মানুষ রাত্রিযাপন করতো না, এমনকি বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। আগুন লাগার কোন উৎস ঘরটিতে না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই বুঝা যায়, কেউ ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। কৃষক মঞ্জুর খান একটি সাধারণ ডাইরী করেছেন। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।