জামালগঞ্জে প্রতিহিংসায় গরুকে কুপিয়ে জখম
অনলাইন ডেস্ক :: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে নিরীহ গরুর মলদ্বারের অংশ কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেছে এক দুর্বৃত্ত। গত সোমবার (১৬ নভেম্বর) প্রতিপক্ষ ভীমখালী ইউনিয়নের আব্দুল গনীর ছেলে আব্দুল মতিনের সঙ্গে জেদ মিটাতে গিয়ে প্রতিবেশী জয়নুল হকের ছেলে গোলাম হোসেন টিটু এ অপকর্ম করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিপক্ষ আব্দুল মতিনের সঙ্গে জায়গা সংক্রান্ত ব্যাপারে গোলাম হোসেন টিটুর দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে টিটু গরুটিকে কুপিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, অভিযুক্ত গোলাম হোসেন টিটু ও গরুর মালিক আব্দুল মতিন পরস্পরের প্রতিবেশী। তাদের দুই পরিবারের মধ্যে প্রায় ২০ বছর যাবৎ জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমাও হয়েছে। শক্তি ও সামর্থের দিক থেকে মতিনের চেয়ে টিটু প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি মতিনকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছেন। অভিযুক্ত টিটু ঘটনার দিন বাড়ির পার্শ্ববর্তী মাঠে বেড়া দিচ্ছিল। পাশেই বাঁধা ছিল আব্দুল মতিনের গরুটি। একপর্যায়ে গরুটি তার জায়গায় চলে এলে গালিগালাজ শুরু করেন টিটু। তার গলা শুনে আব্দুল মতিনের ছোটভাইয়ের স্ত্রী সেদিকে তাকিয়ে গরুটিকে কোপ দিতে দেখে বাড়ির মানুষকে ডাক দেন। তখন আব্দুল মতিনের স্ত্রী গিয়ে দেখতে পান গরুটির মলদ্বারের অংশ থেকে রক্ত ঝরছে। পরে তারা আহত গরুটিকে পশু হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘বাড়ির পেছনের খোলা জায়গায় ছিল গরুটি। টিটু সেখানে বেড়া দিচ্ছিলেন। গরুটিকে দেখে তিনি গালিগালাজ শুরু করেন। তার কণ্ঠ শুনে মতিনের বাড়ির মানুষ গিয়ে দেখেন টিটু দা দিয়ে গরুটিকে কোপাচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। মামলা-মোকদ্দমাও চলছে। গোলাম হোসেন টিটু বাজে প্রকৃতির মানুষ। তার তুলনায় আব্দুল মতিন গরিব। মতিনের রেকর্ডের জায়গা দখলে নিতে টিটু ও টিটুর পরিবার তার পেছনে লেগে আছে।’
এ ব্যাপারে ভীমখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও একই গ্রামের বাসিন্দা মো. তহুর মিয়া বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি ইউপি সদস্য হলেও তারা আমাকে সেটা অবহিত করেননি। তবে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধ আছে বলে জানি।’
গরুর মালিক আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমার বাছুরটা মার দুধ খাইয়া তার জাগাত আইছিল। এরপরে হে (টিটু) গালাগালি কইরা ছেদ দিয়া কাইটালাইছে। এই গরুটা বাগি আনছি। আমি পরের বাড়িত কাম-কাজ কইরা খাই। পরের গরু বাগি পাইল্যা যদি একটা গরু পাই তা হইলে এইডাই আমার আয়। এখন গরুডারে হে জখম করছে। আমি এর বিচার চাই।’ গরু কোপানোর কথা অস্বীকার করে গোলাম হোসেন টিটু বলেন, ‘আমি এই সময় এইখানে আছলাম না। আমি কোপাইছি না। গরু এখন লাডুরি চলে। কোয়াই থেইকা কোপ খাইয়া কোয়াই আইয়া উবাইছে কিতা কইতাম।
জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল আলম বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বর্তমানে সেটি তদন্তাধীন আছে।’