নিজস্ব প্রতিবেদক :: ৫ ফ্রেব্রুয়ারি। বিশিষ্ট সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের চতুর্থ প্রয়াণ দিবস। ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। বাংলাদেশের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের অন্যতম এই নেতার প্রয়াণ দিবস শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেছে জন্মমাটি সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের মানুষজন। এ উপলক্ষে পতাকা উত্তোলন, সমাধিস্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, শোকর্যালি, আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন শেষে সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সন্তান কমান্ড, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মৃতি পরিষদ, গ্রো ফাউন্ডেশন, সেন মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন। বেলা আড়াইটায় দলীয় কার্যালয় থেকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে শোকর্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মৃতি পরিষদের আহবায়ক ও দিরাই পৌরসভার মেয়র বিশ্বজিৎ রায়ের সভাপতিত্বে ও পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়ার পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আলতাব উদ্দিন, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আজিজুর রহমান বুলবুল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল আহমদ, সিরাজ উদ দৌলা তালুকদার, জগদীশ সামন্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশীদ, লুৎফর রহমান এওর, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট অভিরাম তালুকদার, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাস, ইউপি সদস্য এহসান চৌধুরী, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস ছাত্তার, আওয়ামীলীগ নেতা আসাদ উল্লা, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহজাহান সরদার প্রমুখ।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৯৪৫ সালে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার আনোয়ারপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ষাটের দশকে ছাত্রজীবন থেকেই জড়িত ছিলেন বামপন্থী রাজনীতির সাথে। ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের জোয়ারের সময়েও মাত্র ২৫ বছর বয়সে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি পান। তিনি ক্যারিয়ারে সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি অংশ গ্রহণ করা এই রাজনীতিকের একটি অন্যতম পরিচয় ছিল সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে। স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির একজন সদস্য ছিলেন তিনি। নাট্য অভিনেতা হিসেবেও খ্যাতি ছিল তার। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় সবসময়ই বড় ভূমিকা রেখেছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা, রেলমন্ত্রী, জাতীয় সংসদে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনীতিক হিসেবে সর্বশেষ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য পদে থাকলেও দীর্ঘ কেরিয়ারে ছিলেন নানা ভূমিকায়।
