দিরাইয়ে সরকারি জায়গা দখল করে শ্মশানের নামে পুকুর খননের অভিযোগ
দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নে সরকারি জায়গায় শ্মশানের নামে পুকুর খননের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিন গেলে দেখা যায়, চরনারচর মৌজার ৪৩নং জেএলস্থিত ১নং খাস খতিয়ানে ৫টি দাগে সরকারি ৭ একর জায়গার মধ্যে ২ একর জায়গা অবৈধভাবে দখল করে পুকুর খনন করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন। সরকারি জায়গার মধ্যে ৬০২ নং দাগে ১ একর ১৩ শতাংশ বোরো জমি, ৬০৩ নং দাগে ৩ একর নালা রকম ভুমি, ৫৯২ নং দাগে ১৮ শতক নালা রকম ভুমি, ৭৯৫নং দাগে ৫১ শতক গোপাট রকম ভুমি ও ৫৯১ নং দাগে ২ একর ৩৯ শতক লায়েক পতিত রকম রয়েছে। স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, এলাকাবাসীর নাম ভাঙ্গিয়ে চরনারচর গ্রামের পরেশ লাল দাস ও কামালপুর গ্রামের বিমান চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে ১১ সদস্যবিশিষ্ঠ একটি কমিটি গঠন করে ৫৯২ নং দাগে সরকারের ২ একর জায়গা দখল করে শ্মশানের নামে একটি বিশাল পুকুর খনন করেছেন। এ ছাড়া কামালপুর গ্রামের যুগেশ বিশ্বাস ৫৯২নং ও ৭৯৫নং দাগে আরও ১ একর জায়গায় পুকুর খনন ও ভিট তৈরী করেছেন। স্থানীয় সাধারণ লোকজন বলছেন, পার্শ্ববর্তী কামালপুর মৌজার ৪৪ জেএলস্থ ১২৬নং দাগে ২৩ শতক ও ১৩০ নং দাগে ১ একর ৫০শতক জায়গায় শ্মশানের নামে রেকর্ড রয়েছে এবং অনীল দাস গংরা ভোগ দখল করছেন। শ্মশানের নামে রেকর্ডীয় জায়গা থাকার পরও পার্শ্ববর্তি চরনারচর মৌজায় সরকারি খাস জায়গা দখলের জন্য কতিপয় প্রভাবশালী লোক গ্রামবাসির দোহাই দিয়ে শ্মশানের নামে পুকুর খনন করেছেন। সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ ও পুকুর খনন করে শ্রেণী পবির্তনের অভিযোগে যুগেশ বিশ্বাস, দুর্গা বিশ্বাস, চিত্তরঞ্জন, রতিকান্ত দাসসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারি কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাস বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা (তহশিলদার) রঞ্জন কুমার দাস জানান, গত ৭, ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারী সরেজমিন ঘটনাস্থলে এসে ইউএনও স্যার, এসিল্যান্ড স্যার ও সার্ভেয়ার সাব নিষেধাজ্ঞা দিয়ে গেছেন, তাদের মৌখিক নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় আমি এসিল্যান্ড স্যার বরাবর জড়িতদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছি।’ মামলাটি সহকারি কমিশনার ভূমি তাপস শীল যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে দিরাই থানায় প্রেরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন ওসি আশরাফুল ইসলাম। তবে চরনারচর ও কামাল পুর গ্রামের বিধান রায়, রতিরঞ্জন দাস, পরেশ লাল দাস বিমান চন্দ্র দাস তারা জানান, এলাকায় কোন শ্মশান না থাকায়, এলাকাবাসীর উদ্যোগে গত বছর আমরা শ্মশান নির্মাণের উদ্যোগ নেই এবং এ বছর গোসলের সুবিধার জন্য গ্রামবাসির উদ্যোগে পুকুর খনন করি। আমাদের ভুল হয়েছে সরকারের কোন অনুমোদন না নিয়ে। তবে আমরা জেলা প্রশাসক বরাবরে শ্মশানের জায়গার জন্য আবেদন করেছি। জানাযায়, ২০১৫ সালে চরনারচর গ্রামের বিকাশ বিশ্বাস ও তার বোন রেখা বিশ্বাসের নামে ৫৯১ নং দাগে স্থানীয় ভুমি অফিস থেকে দুই একর জায়গা বন্দোবস্ত দেয়া হয়। ৩ মাস পর গ্রামবাসির দাবীর মুখে এই জায়গায় ধান শুকানোর খলা, জলমহালের খলা ও শ্মশানের জন্য উপজেলা ভুমি ব্যবস্থাপনা কমিটি তাদের বন্দোবস্ত বাতিল করে। দিরাই সহকারি কমিশনার ভুমি তাপস শীল বলেছেন, তারা মিথ্যা বলছেন, এটা সরকারি জায়গা, এটা কাউকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়নি, সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে পুকুর খনন করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে তহশিলদার মামলা করেছেন, এখন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।