জাতীয়সারাদেশ

উদ্বোধনের ৮ বছর পর পরিকল্পনা মন্ত্রীর হাত ধরে চালু হচ্ছে জগদল হাসপাতাল

দিরাই প্রতিনিধি :: উদ্বোধনের ৮ বছর পর অবশেষে সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রীর হাত ধরে স্বাস্থ্যসেবা চালু হচ্ছে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম জগদলে নির্মিত ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে। আজ শনিবার (২০ ফেব্রæয়ারি) পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে হাসপাতালটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে। রাজনৈতিক মতবিরোধের কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করলেও প্রত্যন্ত এলাকার সাধারণ মানুষ আনন্দিত। ২০১৩ সনের ২৩ অক্টোবর তৎকালীন দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এই হাসপাতালের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর কেটে গেছে প্রায় ৮ বছর। হাসপাতালের সেবা বঞ্চিত ছিলো হাওরপাড়ের ৫০ টি গ্রামের সাধারণ মানুষ। সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় স‚ত্রে জানা গেছে, হাওরঘেরা জনপদ দিরাই উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ২০১৩ সনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখানে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শেষ করে। এটি চালু হলে দিরাই প‚র্বাঞ্চলের লাখো মানুষের স্বাস্থ্যসেবার পথ খুলে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব ও জগদলের সন্তান মো. মিজানুর রহমান নেপথ্য থেকে কাজ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে নির্মিত হাসপাতালটি চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। যার ফলে দিরাই প‚র্বাঞ্চলের লাখো মানুষ এখনো স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত। এই অবস্থায় স¤প্রতি সাবেক যুগ্ম সচিব মিজানুর রহমান স্থানীয় তৃণম‚ল আওয়ামী লীগের মাধ্যমে হাসপাতালটি চালু করতে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের শরণাপন্ন হন। স্বাস্থ্যসেবা তৃণম‚ল মানুষের বিশেষ করে দুর্গম হাওরের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার কথা সংশ্লিষ্টদের স্মরণ করিয়ে হাসপাতালে সেবার দ্বার উদ্ঘাটনের নির্দেশনা দেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে তিনি আগামী ২০ ফেব্রæয়ারি এই হাসপাতালটির সেবা উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। স্থানীয় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা নুনু মিয়া এ উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। তবে মন্ত্রী যাতে হাসপাতালটি উদ্বোধন না করেন তার জন্য উপজেলা আ.লীগের একটি অংশ আবারও মাঠে নেমেছেন। সরকারের খরচে নির্মিত হাসপাতালের সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে বিএনপির অনুষ্ঠান বলে এর বিরোধিতা করে ১৬ ফেব্রæয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেছে দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। জগদল বাজারের ব্যবসায়ী জামিল মিয়া বলেন, হাসপাতাল নিয়ে এলাকার মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল। ৮ বছর আগে কাজ শেষ হলেও চালু হয়নি। আমরা আশা প্রায় বাদ দিয়েছিলাম। অবশেষে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সুনজর পড়ায় আমাদের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। এজন্য পরিকল্পনা মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান ব্যবসায়ী জামিল। প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা নুনু মিয়া বলেন, আমরা এলাকাবাসী পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ তিনি অজোপাড়াগাঁয়ে সরকারি খরচে নির্মিত গুরুত্বপ‚র্ণ হাসপাতালের স্বাস্থসেবার দ্বারোদ্ঘাটন করতে আসছেন। সরকার এত টাকা খরচ করে হাসপাতালটি তৈরি করলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে চালু হচ্ছেনা। এতে ক্ষতি হচ্ছে হাওরের গরিব মানুষের। এটা নিয়ে রাজনীতি যারা করছে তারা গরিব মানুষ উপকৃত হোক এটা চায়না। জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ন‚রুল হুদা মুুকুট বলেন, আমরা পরিকল্পনামন্ত্রীর মতো একজন সজ্জন ও উন্নয়নমুখি মানুষ পেয়ে গর্বিত। ৮ বছর ধরে পড়ে থাকা হাসপাতালটির সেবার দ্বারোদ্ঘাটন করতে যাচ্ছেন তিনি। এই খবরে আনন্দিত সাধারণ মানুষজন। আমরাও জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে যাব। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে হাওরের মানুষের উপকার হয় এমন কাজ করার জন্য। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালটি অযতেœ পড়ে আছে। সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে না। এলাকার সাধারণ মানুষ আমাকে এই বিষয়টি বলার পর আমি হাওরের দুর্গম এলাকার এই হাসপাতালটিতে সেবা কার্যক্রম চালু করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি। প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সহধর্মিণী এমপি ড. জয়া সেনগুপ্তাকেও টেলিফোন করেছিলাম। তিনি ফোন ধরেননি। আমি চাই আমরা সবাই মিলে আমাদের নেত্রীর সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে।

Related Articles

Back to top button
Share via
Copy link
Powered by Social Snap