গরীব মানুষকে ভালোবেসে ঈমানের সাথে কাজ করতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকারের টাকার অভাব নেই, অভাব আমাদের ঈমানের। চোগলখোরি, ষড়যন্ত্র, দুর্নীতি ছাড়তে হবে। গরীব মানুষকে ভালোবেসে ঈমানের সাথে কাজ করতে হবে।
শনিবার বেলা সাড়ে ৪ টায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সেবা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে জগদল হাইস্কুল মাঠে এলাকাবাসীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশ বিরোধী রাজাকার ছাড়া সবাই আওয়ামী লীগ করতে পারবে। জগদল গ্রামের বাসিন্দা সাবেক জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘মিজান যদি রাজাকার না হয়, তবে আমরা তার সাথে বসবো। উন্নয়নের স্বার্থে একসাথে কাজ করবো। মিজান এমপি হবে কিনা, আমি এমপি হবো কিনা, সেটা দেখার এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর। ‘রাস্তা চাই’ দাবি সম্বলিত তোরণ দেখে এমএ মান্নান সুনামগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় নিজের বাল্যকালের স্মৃতিচারণ করে বলেন,’ আমি ভাইট্টালা পুয়া (ছেলে), ডুংরিয়া (পরিকল্পনামন্ত্রী গ্রাম) থেকে সাঁতরাইয়া উজানগাঁও স্কুলে গেছি’। বাতি ছিলোনা, আলো ছিলোনা, লেমবাতি জ্বালাইয়া পড়াশোনা করছি।
তিনি বলেন, মানুষের কষ্ট লাঘবের বড় উপায় হচ্ছে রাস্তা করে দেয়া।শেখ হাসিনা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতুসহ সারাদেশে বিভিন্ন সড়ক নির্মাণ করছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। আপনাদের এই দিরাই-জগদল সড়ক করতে কয়টাকা লাগবে। তবে শুধু টাকা থাকলেই হবে না, এজন্য প্রয়োজন পরিকল্পনা।
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা নানু মিয়ার সভাপতিত্বে ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রঞ্জন রায়, সমাজকর্মী আবদুল লতিফ, ইমরুল হাসান সজলের যৌথ সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি নুরুল হুদা মুকুট, সাবেক জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের আহবায়ক খায়রুল হুদা চপল, সিভিল সার্জন ডা. শামসুদ্দিন, দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম চৌধুরী, দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়া, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কাশেম, আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল করিম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরী, সদস্য ও তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অমল কর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দীপংকর কান্তি দে, জগদল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি শাহ মো. আলীরব, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মামুনুর রশীদ প্রমুখ।
এরআগে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম চৌধুরী ও দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার নেতৃত্বে বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে দিরাইয়ে স্বাগত জানানো হয়। পরিকল্পনামন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে দিরাই মদনপুর সড়ক, দিরাই জগদল সড়ক ও পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কে একাধিক তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুনে সজ্জিত করা হয়।দুপুর ১২ টায় দিরাই উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে ‘হাওর রক্ষা বাঁধের কাজের অগ্রগতি ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনামন্ত্রী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুনের সভাপতিত্বে সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের দিরাই ও পার্শ্ববর্তী জগন্নাথপুর উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নবাসীর কাঙ্খিত ‘জগদল ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে সেবা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে হাওর পাড়ের লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার দ্বার উন্মোচন হলো। দিরাই উপজেলায় চাপতির হাওর বেষ্টিত হ্যারাচ্যাপ্টা নদীর কোল ঘেঁষে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত এই হাসপাতালটি ২০১৩ সালে তৎকালীন সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত উদ্বোধন করেন। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জগদল হাসপাতালের উদ্বোধনের ৮ বছর অতিবাহিত হলেও স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত ছিলো এলাকার মানুষ।