বাবার লাশ নিয়ে ফেরার পথে ট্রাকচাপায় ২ ছেলেসহ আহত ৬
নিজস্ব প্রতিবেদক :: করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রিয় বাবা মারা যাওয়ার পর এম্বুলেন্সে লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন দুই ভাই। সাথে ছিলেন চাচা, মামা ও মামাতো ভাই। পথে ঘাতক ট্রাক লাশবাহী এম্বুলেন্সকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে এম্বুলেন্সে থাকা চালকসহ ৬ জনই গুরুতর আহত হয়েছেন। রোববার (১৮ জুলাই) বেলা ১০ টার দিকে সিলেটের ওসমানীনগরের তাজপুর বাজার সংলগ্ন সিলেট ঢাকা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এম্বুলেন্সটি ঢাকা থেকে আহতদের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা সদরে আসছিল। দূর্ঘটনার পর স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আহতদের উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আহতরা হলেন, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের ধল আশ্রম গ্রামের বাসিন্দা, দিরাই উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সোহাগ আহমেদ, তার ভাই দিরাই কলেজ ছাত্রদলের সদস্য শাহ মিনহাজ নুর, তাদের চাচা দিরাই উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ও তাড়ল ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি আলী আহমদ, মামা মোজাম্মেল হক, মামাতো ভাই সৌরভ। আহতরা সকলেই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তিবস্থায় চিকিৎসাধীন। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে স্বজনরা ছুটে গিয়ে লাশ গ্রামে নিয়ে আসেন। রোববার বেলা সাড়ে ৫ টায় গ্রামের কবরস্থানে দাফন হবে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। ধল আশ্রম গ্রামের মাওলানা আখলাকুর রহমান জানান, গত ৬ জুলাই আলী নুর আহমদের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। তখন তিনি সিলেট রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওই হাসপাতালে করোনা ইউনিট না থাকায় এবং মুমূর্ষু আলী নুর আহমদের জন্য সিলেটে আইসিইউ বেড না পাওয়ায় তাকে নিয়ে তার দুই ছেলে সোহাগ, মিনহাজ, ভাই আলী আহমদসহ স্বজনরা ঢাকায় যায়। রাজধানীর রেঁনেসা হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার রাত ২ টার দিকে আলী নুর আহমদ মৃত্যুবরণ করেন। লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সিলেটের তাজপুরে ওই দূর্ঘটনা ঘটে। এদিকে এ ঘটনার খবর জানাজানি হলে দিরাই উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। ইউপি সদস্য লাল মিয়া ঘটনার বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, করোনা আক্রান্ত আলী নুর আহমদকে নিয়ে উনার দুই ছেলে, ভাই ও স্বজনরা বিরামহীন ছুটেছেন। জানাজার নামাজে প্রিয় পুত্র, প্রিয় ভাই অংশ নিতে পারেনি। খুব হৃদয়বিদারক।