বোরো ফসল রক্ষায় আগাম ধানের জাত উদ্ভাবনের বিকল্প নেই – দিরাইয়ে কৃষি মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক :: কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, পৃথিবীতে তিনজন সৎ রাষ্ট্র নায়কের একজন শেখ হাসিনা। পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সততা নিষ্ঠার দাবীদার তিনি। সারা পৃথিবী এটা স্বীকার করে। শেখ হাসিনা ন্যায়বান, আদর্শবান, সততা নিষ্ঠার সাথে কাজ করেন। যাদের ফসল তলিয়ে গেছে। তারা যেন ক্ষুধায় কষ্ট না করে, কোন মানুষ যেন অভুক্ত না থাকে। তার জন্য আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি আমরা ইনশাআল্লাহ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চাপতির হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত বৈশাখী বাঁধ পরিদর্শনে এসে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, দেশ আজ উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে। দেশে আজ খাদ্য ঘাটতি ওইভাবে নেই। আজকে খাদ্য নিয়ে হাহাকার নেই, সংকট নেই। হাওরের মানুষ প্রকৃতির অভিশাপে ক্ষুধায় কষ্ট করবে। তারা আমাদের এ দেশেরই নাগরিক। সেটা হতে পারে না। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন মানবদরদী মানুষ। মানবতার মা বলে আমরা দাবী করি। ইনশাআল্লাহ তিনি বেঁচে থাকতে যতোটা সম্ভব এ এলাকার যে কৃষক ভাইয়েরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পরিবার-পরিজনের পাশে আমরা আছি। তিনি বলেন, হাওরের কৃষকরা না খেয়ে থাকবে না। যেসব কৃষকের বোরো ধান তলিয়ে গেছে তাদেরকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, বোরো ফসল রক্ষায় আগাম জাতের ধান উদ্ভাবনের বিকল্প নেই। আমরা এমন জাতের ধান আবিস্কার করতে চাই, যেটা অন্তত ১৫/২০ আগে কাটা যাবে। আমাদের বিজ্ঞানীরা রাতদিন পরিশ্রম করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পূনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগামী বোরো মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত ১২ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে বীজ, সার দেয়া হবে।
মন্ত্রীর বাঁধ পরিদর্শনের সংবাদ জেনে সকাল থেকে বৈশাখী বাঁধে স্থানীয় শতাধিক কৃষক জড়ো হন। কৃষকরা স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের ভীড়ে মন্ত্রীর সাথে কথা বলার সুযোগ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। হট্টগোলের মাধ্যমে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কৃষকদের কথা বলার অনুমতি দেন মন্ত্রী। এসময় তাড়ল গ্রামের কৃষক নূরে আলম অভিযোগ করে বলেন, ২০১৮ সাল থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই হাওর-বাঁধের কাজের পিআইসি কৃষকের অনুকূলে ছেড়ে দিয়েছেন। জমি যার পিআইসি তার। ওই কৃষক বাঁধের মাটির দিকে তাকিয়ে বলেন, এই যে স্যার আপনি দাঁড়িয়ে আছেন। এই মাটি দুরমুজ হয় নাই। কম্প্রেকশন হয় নাই। হাইট হয় নাই। কাজ সমাপ্তির নির্ধারিত তারিখের কিছুদিন আগে পিআইসি অনুমোদন দেয়া হয়। জয়া সেনগুপ্তার (স্থানীয় এমপি) নেতাদের দরকষাকষি চলতেই থাকে।
কৃষকের অভিযোগের শুনে মন্ত্রী বলেন, পিআইসি নিয়ে দুর্নীতি অনিয়মের কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলবো। হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ যাতে প্রতি বছর ডিসেম্বরের আগে শুরু করা যায় সেটা নিয়েও আমি কথা বলবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য শামিমা আক্তার খানম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন, দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদুর রহমান মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দিরাই সার্কেল) আবু সুফিয়ান সহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। এরপর কৃষি মন্ত্রী স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তার বাসভবনে তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎএবং প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।