দিরাইয়ের চাতল-কলিয়ার কাপন সড়কের সরেজমিন প্রতিবেদন এখন ঢাকায়
দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চাতল হতে কলিয়ার কাপন বাজার পর্যন্ত পরিত্যক্ত সড়কটি সকল মৌসুমে চলাচল উপযোগী করে নির্মাণের প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। সোমবার দিরাই উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে সরেজমিন প্রতিবেদনটি ঢাকায় প্রকল্প পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়। দিরাই উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শাহজাহান চৌধুরীর আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর নির্দেশনায় প্রকল্প পরিচালক সড়কটি সরেজমিন প্রতিবেদন চাওয়ায় তা পাঠানো হয়েছে।
জানাযায়, চাপতির হাওরটি দিরাই উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তর হাওর। এ হাওরে রয়েছে ৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর বোরো জমি। স্বাধীনতার পর থেকে চাতল থেকে কলিয়ার কাপন বাজার পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কটি চাপতির হাওর রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছিল। এ সড়কটি সকল মৌসুমে চলাচল উপযোগী করে নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকার সকল শ্রেণি পেশার মানুষ। এর প্রেক্ষিতে গত ২৯ মার্চ সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কলিয়ার কাপন গ্রামের সন্তান শাহজাহান চৌধুরী পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্ননের সুপারিশ নিয়ে সড়কটি সকল মৌসুমে চলাচল উপযোগী করে নির্মাাণে জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করেন। শাহজাহান চৌধুরীর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান প্রকৌশলীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকল্প পরিচালক দিরাই উপজেলা প্রকৌশলীকে সড়কটি সরেজমিন প্রতিবেদন পাঠানো নির্দেশ দেন। পরে গত ৬ এপ্রিল দিরাই উপজেলা প্রকৌশলী সড়কটি সরেজমিন পরিদর্শন করে সোমবার (১৮ এপ্রিল) প্রতিবেদন প্রকল্প পরিচালক বরাবর পাঠান।
দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, স্বাধীনতার পর থেকে ছাতল থেকে কলিয়ার কাপন পর্যন্ত সড়কটি চাপতির হাওরের ফসল রক্ষার কাজে এবং এলাকার মানুষের চলাচলে জন্য নির্মাণ করতো পানি উন্নয়ন বোর্ড । এ সড়কটির ফলে এ হাওরের ৯০ ভাগ ফসল অকাল বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেত। কিন্তু গত তিন বছর ধরে এ সড়কটি পানি উন্নয়ন বোর্ডে কাবিটা স্কীম থেকে বাদ দেয়া হয়। ফলে গত ৬ এপ্রিল দিনগত রাত এ সড়কটি উপচে ঢলে পানি হাওরে ঢুকে তলিয়ে গেছে অন্তত ৪ হাজার হেক্টর কাচা ধান।
জগদল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী ছুবা মিয়া জানান, চাতল স্লুইস গেট থেকে কলিয়ার কাপন বাজার পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কটি সকল মৌসুমে চলাচল উপযোগী করে নির্মাণে দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। তিনি জানান এ সড়কটি নির্মাণ হলে চাপতির হাওরের ৯০ ভাগ বোরো ফসল অকাল বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে। একই ইউনিয়নের বকশিওরপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. কামরুল ইসলাম জানান, চাতল স্লুইস গেট থেকে কলিয়ার কাপন বাজার পর্যন্ত সড়কটি সকল মৌসুমে চলাচল উপযোগী করে নির্মাণ করা হলে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ৪২টি গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার কৃষকের বোরো ফসল অকাল বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে। পাশাপাশি আরো অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের চলাচলের সুবিধা হবে। এ সড়কটি নির্মাণ হলে এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল দেশের বিভিন্ন জায়গা কম খরচে ও সময়ে পাঠাতে পারবেন এবং ন্যায্য মূল্যও পাবেন। এছাড়াও স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা অদি সহজে দিরাই যেতে পারবে। শাহজাহান চৌধুরী জানান, এ সড়কটি সকল মৌসুমে চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণের লক্ষ্যে গত ২৯ মার্চ পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সুপারিশ নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর(এলজিইডি)’র প্রধান প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করেছি। তিনি আরো জানান, এ সড়কটি নির্মিত হলে দিরাই উপজেলার পূর্বাঞ্চলের মানুষের আর্থসামজিক উন্নয়ন হবে অর্থাৎ, জগদল, তাড়ল ও কুলঞ্জ ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের চলাচলের সুবিধা হবে। এছাড়াও দিরাই পৌরসভার চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক, কমিরপুর, জগদল ও তাড়ল ইউনিয়নের ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের কৃষকের বোরো ফসল রক্ষা পাবে।