শেষ রক্ষা হয়নি শাল্লার ছায়ার হাওরের
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ৮১নং পিআইসির বাধ ভেঙ্গে তলিয়ে যাচ্ছে সুবিশাল ছায়ার হাওর। কড়া তদারকি ও নজরদারির মধ্যেও রাতে ওই বাঁধে লিকেজ হয়ে রবিবার সকালে ভেঙে যায়। বাঁধটি ভাঙার পেছনে পিআইসির লোকজনের গাফিলতিকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। তবে পিআইসির সভাপতি এ অভিযোগ অস্বীকার করছেন।
গত চৈত্র মাসের মাঝামাঝিতে পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নদনদীর পানি বাড়লে উপজেলা প্রশাসন, পওর বিভাগ, সংশ্লিষ্ট পিআইসির লোকজন ও এলাকাবাসী দিনরাত কাজ করে সবগুলো বাধ অক্ষত রাখলেও নদীর পানি কিছুটা কমে গেলে ও আবহাওয়া অনুকূল আসায় বাধের উপর জনতৎপরতা হ্রাস পায়। কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে ধান কাটায়। কৃষকেরা বাধ ছেড়ে দিলেও উপজেলা প্রশাসন থেমে থাকেনি। প্রতিটি বাঁধেই প্রশাসনের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। জানা যায়, উপজেলার ছায়ার হাওরে এ বছর শাল্লা অংশে ৪হাজার ৬শ ৩৭হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। তাছাড়া কিশোরগঞ্জের ইটনা অংশে ও নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি অংশে প্রায় হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। শাল্লা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ও ইউএনও অফিস এ পর্যন্ত ছায়ার হাওরের ৯৫ শতাংশ জমির ফসল কাটা হয়েছে বলে দাবী করলেও কৃষকরা ভিন্ন কথা বলছেন। তারা বলছেন, এখনো ছায়ার হাওরে ৩০ শতাংশ ফসল কাটা হয়নি। হাওর তলিয়ে যেতে দুএকদিন সময় লাগবে, এরই মধ্যে আরো কিছু ফসল কাটা সম্ভব হতে পারে। ছায়ার হাওরপাড়ের সুলতানপুর গ্রামের কৃষক তকবির হোসেন বলেন, আমার প্রায় ৩০% জমি কাটার বাকি রয়েছে। শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে দেরী হচ্ছে। তিনি আরো বলেন। তার মতে ছায়ার হাওরে প্রায় ২০শতাংশ জমিতে ফসল এখনো রয়ে গেছে। ওই হাওরের মুক্তারপুর গ্রামের কৃষক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিধান চন্দ্র চৌধুরী জানান এখনো ছায়ার হাওরে প্রায় ২৫ শতাংশ ফসল রয়ে গেছে। শাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সাত্তার মিয়া জানান, হাওরে এখনো ছয় আনা জমির ফসল কাটা হয়নি। খালিয়াজুড়ির কৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শামীম মোড়ল জানান, তাঁর ইউনিয়ন এলাকায় এখনো ২০% ফসল হাওরে রয়ে গেছে। আজ-কালের মধ্যে ধান কাটা শেষ করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু তালেব বলেন, পানি আসার সাথে সাথেই আমরা সাধারন কৃষকগনকে সঙ্গে নিয়ে আপ্রান চেষ্টা করে এতোদিন বাঁধ অক্ষত রাখতে পেরেছি। কিন্তু গত রাতে প্রবল কালবৈশাখী ঝড়ের কারনে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। বাঁধের অক্ষত স্থান কি ভাবে ভেঙে গেলো বুঝে উঠতে পারছি না। এ স্থানে বাধ ভাঙ্গার কথা নয়। মূল ক্লোজার এখনো অক্ষত রয়েছে। ছায়ার হাওরের ৯৫ শতাংশ জমির ফসল কাটা শেষ হয়েছে জানিয়েছেন ইউএনও।