দিরাই টুক দিরাই গ্রামে ‘জগৎজ্যোতি কুটির’ নির্মাণের দাবী জানালেন ফুলু রানী দাস

মোশাহিদ আহমদ : ১৯৭১ সালের ১৬ নভেম্বর হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শহীদ জগৎজ্যোতি দাসের (বীর বিক্রম) নামে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন শহীদ জগৎজ্যোতি বড় বোন ফুলু রানী দাস। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলু রানী দাসের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাশেদুল হক চৌধুরী। ফুলু রানী দাস আলাপকালে বলেন, আমার ভাই শহীদ জগৎজ্যোতি হানাদার বাহিনীর গুলিতে মারা যাবার পর তার লাশ রাজাকাররা আতংক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে আজমিরীগঞ্জ বাজারে একটি খুঁটির সাথে পেরেক দিয়ে আটকে ঝুলিয়ে রাখে। এরপর সেই লাশ কুশিয়ারা নদীতে ভাসিয়ে দিলে আমাদের স্বজন ও এলাকার লোকজন আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাখাইলচর এলাকা থেকে উদ্ধার করে আমাদের নিজ বাড়িতে এনে দাহ করে। পরবর্তীতে আমাদের বড় ভাইয়ের ছেলেরা বাড়ি বিক্রয় করে দিলে সমাধিস্থল সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। সমাধিস্থল শনাক্ত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কিংবা সেখান থেকে মাটি সংগ্রহ করে টুকদিরাই গ্রামে শহীদ জগৎজ্যোতির স্মৃতিবিজড়িত বোনের বাড়িতে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান ফুলু রানী দাস। তিনি আরও বলেন, একটি বিদেশী সংগঠন আমার এই ছোট্র ঘরটি নির্মাণ করে দিয়েছিল, যার একটি অংশ মাটিতে দেবে গেছে, এবছর সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে একটি টিনের ঘর করে দেওয়া হয়েছে। এবাড়িতে জগৎজ্যোতি নিয়মিত আসা-যাওয়া করতো এবং মাসের পর মাস এখানে থাকতো। তার স্মৃতিবিজড়িত এই মাটিতে ‘জগৎজ্যোতি কুটির” নামে একটি পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাই, যে ঘরে আমি আমার নাতি-নাতনীদের নিয়ে জীবনের বাকি দিনগুলো কাটাতে চাই। ফুলু রানী দাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার ছবি দেখিয়ে বলেন, দুইবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডাকে উনার সাথে সাক্ষাৎ করেছি, তিনি আমায় মা বলে সম্বোধন করেছেন, উনার মুখপানে তাকিয়ে কিছুটা হলেও ভাই হারানোর ব্যথা ভুলতে পেরেছি। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাশেদুল হক চৌধুরী মনোযোগ সহকারে ফুলু রানী দাসের কথা শুনেন এবং তার এসব কথা জেলা প্রশাসককে অবগত করে সবধরণের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সদস্য সচিব মালেক হোসেন পীর, শহীদ জগৎজ্যোতির সহচর গীর্ব্বান প্রসাদ রায়, সাংবাদিক প্রশান্ত সাগর দাস, অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোশাহিদ আহমদ, সিও স্বপন কান্তি দাস, ছাত্রলীগ নেতা অসীম তালুকদার, স্কাউট লিডার তায়েফ চৌধুরী, ফুলু রানী দাসের পুত্র বিমল রায়সহ পরিবারের সদস্যরা।
