সারাদেশ

দিরাইয়ে ধান কাটার মৌসুমে নিরুত্তাপ নির্বাচন

অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ

আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এক ফসলি বোরো ফসল নির্ভর কৃষিপ্রধান দিরাই উপজেলায় এখন বোরো ধান কাটার মৌসুম। ভোটারদের বড় একটি অংশ ব্যস্ত ধান কাটা, মাড়াই ও সংরক্ষণের কাজে। শিলাবৃষ্টি ও আবহাওয়া অফিসের আগাম বন্যার পুর্বাভাসে কৃষক পরিবারের কারোরই যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। পরিবারের সারাবছরের ব্যয় নির্বাহের একমাত্র ফসল মাঠ থেকে ঘরে আনতে দিনরাত একাকার করে কাজ করছেন তারা। হাওরের শ্রমিক শ্রেণির মানুষেরাও ব্যস্ত বৈশাখী কাজে। ফলে নির্বাচনের দিন-ক্ষণ ঘনিয়ে এলেও অনেকটাই নিরুত্তাপ দিরাই উপজেলা।

দিরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নারী-পুরুষ মিলিয়ে আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, সদ্য বহিস্কৃত উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গোলাপ মিয়া, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়, জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আজাদুল ইসলাম রতন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট রিপা সিনহা।

প্রার্থীরা বলেন, বৈশাখ মাসে ধান কাটার মৌসুমে নির্বাচন দেওয়ায় তারা অনেকটা অপ্রস্তুত। গ্রামে প্রচারণায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায় না। সবাই হাওরে ধান কাটায় ব্যস্ত। হাওরবাসীর জন্য বৈশাখ মাসের প্রতিটি মুহুর্ত খুবই গুরুত্বপুর্ণ। এ সময় কেউ নির্বাচন আশা করেনি।

দিরাই বাজারের ব্যবসায়ী আকমল মিয়া বলেন, বৈশাখ মাসে নির্বাচন নিয়ে কথা বলার সময় আছে নাকি। সারাবছরে কষ্টার্জিত ফসল ঘরে উঠাতে সবাই ব্যস্ত থাকে। এজন্যই এবার দিরাইয়ে নির্বাচন জমে উঠেনি।

উপজেলার জগদল গ্রামের হেলাল আহমদ বলেন, নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের কোন আগ্রহ নেই। ভোট আসে, ভোট যায়। মানুষের দুর্ভোগের শেষ হয় না। দিরাই কালনী নদীর উপর কয়েকবছর আগে ব্রীজ হয়েছে। কিন্তু দিরাই-জগদল সড়ক আজো আলোর মুখ দেখেনি। নেতাদের উন্নয়ন প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলেও জয়-পরাজয়ে দলীয় সমর্থন মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা বলয়ের প্রদীপ রায় এবং এমপি বিরোধী বলয়ের রঞ্জন রায় ছাড়াও আওয়ামী লীগের আরও দুই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামীলীগের চারজন প্রার্থীর বিপরীতে বিএনপির মো. গোলাপ মিয়া একক প্রার্থী হওয়ায় রয়েছেন সুবিধাজনক অবস্থানে। যদিও দলের বর্জনের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ইতোমধ্যে বহিস্কার হয়েছেন তিনি। বিএনপি সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে টানতে পারাটাও তার সামনে চ্যালেঞ্জ। গোলাপ মিয়া এর আগে দিরাই উপজেলা পরিষদের দুইবারের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। অপরদিকে গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে প্রদীপ রায় ও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রঞ্জন রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সামান্য ভোটের ব্যবধানে দুইজনই পরাজিত হন। এখন আবার দু’জন পুরোনো লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন। আগামী ৮ মে দিরাই উপজেলা পরিষদের ষষ্ঠ নির্বাচনে ৭৪ টি কেন্দ্রে ভোটারসংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ২২৫ জন। 

সুত্রঃ- এনটিভি ইউকে

Related Articles

Back to top button
Share via
Copy link
Powered by Social Snap