সারাদেশ

জীবনে এমন ঠান্ডা মাথার খুন আর দেখিনি: ডিবি হারুন

নিউজ ডেস্কঃ

ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেছেন,  কলকাতার যে বাড়িতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনারকে হত্যা করা হয়েছে, মনে হচ্ছে সেখানে এখনও ঘাতকদের অট্টহাসি শুনতে পাচ্ছি। জীবনে অনেক খুনের তদন্ত করেছি, কিন্তু এমন ঠান্ডা মাথার খুন দেখিনি।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে পশ্চিবমঙ্গের কলকাতায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ।

তিনি বলেন, ‘তদন্তে নেমে এ ঘটনায় বাংলাদেশে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি।  কলকাতা পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। যে কায়দায় হত্যা করা হয়েছে, এটা মেনে নেওয়া কঠিন। ঠান্ডা মাথায় লাশের টুকরো গুম করা হয়েছে। যে আলিশান বাড়িতে সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে, মনে হয় এখনও সেখানে ঘাতকদের অট্টহাসি শুনতে পাচ্ছি। চাকরিজীবনে অনেক খুনের তদন্ত করেছি। কিন্তু এমন ঠান্ডা মাথার খুন দেখিনি।’

হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের বিচার খুব কঠিন হবে বলে আমি মনে করি না। তিন আসামি বাংলাদেশে আছে, একজন এখানে আছে। চারজনের বক্তব্য, জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য পারিপার্শ্বিক তথ্য মিলেছে। ডিজিটাল তথ্য, পারিপার্শ্বিক এভিডেন্স নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা এখনো হতাশ নই। কাজ করছি, আশা করছি তার দেহ বা দেহাংশ উদ্ধার সম্ভব হবে।’

তিনি বলেন, ‘কলকাতার তদন্তকারী সিআইডি কর্মকর্তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। তারা আজও সার্চ করছেন। আমরাও কিছু অনুরোধ করেছি। সঞ্জীবা গার্ডেন্সের দিকে কাঠের পুলটার পাশে যে হাতিশালা লেক আছে, সেখানে সার্চ করতে বলেছি। পাশাপাশি সংসদ সদস্য আনার যে ফ্ল্যাটে ছিলেন সেখানেও সার্চ করতে বলেছি। কারণ, ওই বাসায় তিনটা কমোড আছে। সেখানে ফ্ল্যাশ করার পর জমা পানি যেই সুয়ারেজ লাইনে জমে, সেটাও ভাঙতে বলেছি। সঙ্গে লেকও সার্চ করতে বলেছি।’

ডিবি হারুন বলেন, ‘এমপি আনার হত্যার গুরুত্বপূর্ণ ঘাতক আমাদের কাছে আছে। সঙ্গে যে মেয়েটা ছিল সেও আমাদের কাছে আছে। তারা আমাদের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। সেই তথ্যগুলো নিয়ে আমরা কলকাতায় এসেছি। আমরা এখানকার সিআইডির সদর দপ্তর সফর করেছি। তাদের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমরা প্রায় সব তথ্যের মিল পেয়েছি। ডিজিটাল এভিডেন্সও আছে। ওই মেয়েটা তো সেখানে ছিল। একটা জীবন্ত মানুষ সেখানে গেছেন। ছবি-সিসিটিভি ফুটেজ আছে। সবাই বের হলেন কিন্তু এমপি আনার বের হলেন না। সেটারও তো প্রমাণ আছে।’ হত্যায় জড়িতদের তথ্যমতে, লাশের টুকরো ফেলা হয়েছে বাগজোলা খালে। জিহাদের সঙ্গে ক্যাবচালক জুবেরের বর্ণনা মিলিয়ে দেখতে তদন্তকারীরা নিউ টাউন শহরের একাধিক জায়গায় যান। তবে হত্যাকাণ্ডের ১৫ দিন পার হলেও আজ (২৮ মে) দুপুর ৩টা পর্যন্ত সংসদ সদস্য আনারের দেহাংশের সন্ধান মেলেনি। উদ্ধার হয়নি খুনে ব্যবহৃত চাপাতিসহ অন্য ধারালো অস্ত্রও।

এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে গত রবিবার কলকাতায় যান ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত দল। প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন ওয়ারী বিভাগের ডিসি মো. আব্দুল আহাদ ও এডিসি শাহীদুর রহমান। তারা সেখানে মোট ৮দিন অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে।

সুত্রঃ- জনকণ্ঠ

Related Articles

Back to top button
Share via
Copy link
Powered by Social Snap