শাল্লার বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা জমিলা বেগম আর নেই
স্টাফ রিপোর্টঃ
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা জমিলা বেগম আর নেই। তিনি ১৪ জুন (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৮ টায় ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পথে মারা যান।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের কুখ্যাত দালাল আব্দুল খালেকের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের নৌকার মাঝি দৌলতপুর গ্রামের মামদ আলী সহ তার পরিবারের ৭জনকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মামদ আলীর মেয়ে জমিলা বেগম, ভাগনী, ভাতিজী সহ আরও অসংখ্য পরিবারের নারীদের ধরে নিয়ে যায় রাজাকারের বাঙ্কারে। জমিলা বেগমকে বাঙ্কারে টানা কয়েকদিন নির্যাতন করার পর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান।
দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হলেও স্বাধীন হতে পারেনি দৌলতপুর গ্রামের জমিলা বেগম সহ আরও অনেক বীরাঙ্গনা। স্থানীয় প্রভাবশালী রাজাকারদের অত্যাচার নিপিড়ন সয্য করে মানবেতর জীবনযাপন করতেন। কয়েকবছর আগে সরকারি সম্মানি ভাতার সাথে একটি সরকারি ঘর পান তিনি। জীবদ্দশায় দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। স্বপ্ন দেখতেন একাত্তরের ঘাতক ও নির্যাতনকারীদের বিচার হবে। তবে তার এলাকার ঘাতকদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ অপরাধ ট্রাইবুনালের মামলার অগ্নিসাক্ষী হয়েছিলেন মৃত্যুর আগেও ট্রাইবুনালের তদন্ত কর্মকর্তাসহ আদালতে ঘাতকদের নাম বলে গেছেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে, নাতিনাতনি সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে মারা যান। তার মৃত্যুতে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শোক প্রকাশ করেন।
শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, জমিলা বেগমকে গ্রামের গোরস্থানে সরকারি ভাবে সরকারি ভাবে গার্ড অব অনার দিয়ে শায়িত করা হবে।